স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে হেফাজত নেতাদের বৈঠক

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৪-২০ ০৮:৪৭:১৫


স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সাথে বৈঠক করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শীর্ষ নেতারা। সোমবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে হেফাজতের অন্তত ১০ জন শীর্ষ নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় বৈঠকে বসেন। রাত ১১ টার দিকে বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় হেফাজত নেতারা কোনো কথা বলতে রাজি হননি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রাত ১০টার দিকে হেফাজতের নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসায় ঢোকেন। এসময় ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অংশ নেয়া হেফাজতের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে ছিলেন দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজী, হেফাজতের মহাসচিব নূরুল ইসলাম জিহাদী, মামুনুল হকের ভাই বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান (দেওনার পীর), মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী প্রমুখ।

বৈঠক সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় মামুনুল হকসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর করা মামলা ও গ্রেপ্তার নিয়ে কথা হয়। হেফাজত নেতারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছেন, তাঁরা সরকারের বিরুদ্ধে নন। সরকারের বিরুদ্ধে তাঁদের কোনো আন্দোলনের কর্মসূচিও ছিল না। তাঁরা আরও বলেছেন, হেফাজতের নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এ ছাড়া মাদ্রাসা খুলে দিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন তাঁরা।

বৈঠক শেষে গত রাত সাড়ে ১২টার দিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান মুঠোফোনে একটি গণমাধ্যমকে বলেন, হেফাজত নেতারা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তাঁদের তিনি বলেছেন, পুলিশ নিরীহ কাউকে হয়রানি করছে না। যারা ভাঙচুর–সহিংসতায় জড়িত, শুধু তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। যা করা হচ্ছে, সব আইন অনুযায়ীই হচ্ছে। আর মাদ্রাসা খুলে দেওয়া বা বন্ধের সিদ্ধান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একার কোনো বিষয় নয়।

এর আগে সোমবার দুপুরে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সাথে হেফাজতের পাঁচ শীর্ষ নেতা বৈঠক করেন। হেফাজতের পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের কঠোর অবস্থানের কারণে কোণঠাসা হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা সমঝোতার চেষ্টা করছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তারা গোয়েন্দা সংস্থা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেছেন। হেফাজতের নেতারা চাইছেন, আর কোনো নেতাকর্মীকে যেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গ্রেফতার না করে।

উল্লেখ্য, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের বিরোধিতা করে আন্দোলন করে হেফাজতে ইসলাম। তখনো হেফাজতের শীর্ষ নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ না করেই একাধিক মামলা দায়ের করা হয়। তবে ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্টে হেফাজতের প্রভাবশালী নেতা মাওলানা মামুনুল হক আটক হলে নড়েচড়ে বসে সরকার।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাতেই হেফাজতের মধ্যম ও শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সর্বশেষ রোববার (১৮ এপ্রিল) মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করা হয় হেফাজতের প্রভাবশালী নেতা মাওলানা মামুনুল হককে।

সোমবার তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবিবসহ আরো কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।

সানবিডি/ এ এ/ খান