১৯ ইউনিটের চেষ্টায় আরমানিটোলার আগুন নিয়ন্ত্রণে, নিহত ২
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৪-২৩ ০৮:৪৬:৫১
রাজধানীর বাবুবাজার ব্রিজের পাশে আরমানিটোলায় ছয়তলা হাজী মুসা ম্যানসন ভবনে কেমিক্যাল গোডাউনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিটের চেষ্টায় শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-পরিচলাক (ঢাকা মেট্রো) দেবাশীষ বর্ধন।
তিনি বলেন, আমরা নিলুফা নামের এক নারীকে ভবন থেকে উদ্ধার করেছি। তার প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তাকে অচেতন অবস্থায় আমরা ঢামেক হাসপাতালে পাঠাই।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান আগুন লাগার ঘটনায় দুইজন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তাদের পরিচয় জানা যায়নি।
তিনি বলেন, এটি অপরিকল্পিত কেমিক্যাল মার্কেট। এই ভবনে আমরা কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা দেখতে পাইনি। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি ১০-১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে। এ ঘটনায় আমাদের তিন জন কর্মী আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩টা ১৮ মিনিটে আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানসনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ওই ভবনের দোতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত লোকজন বসবাস করে। আগুন লাগার পর ভবনের ছাদে কিছু লোক আটকা পড়ে।
এর আগে, ফায়ার সার্ভিস সদর দফতরের ডিউটি অফিসার মাহফুজ রিবেন বলেন, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন আরমানিটোলা খেলার মাঠের পাশে একটি কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের খবর পাই রাত ৩টা ১৮ মিনিটে।
প্রথমে ছয়টি ও পরে ভয়াবহতা বেড়ে গেলে আরও চারটিসহ মোট ১০টি ইউনিট পাঠানো হয়। পরে আরও বাড়িয়ে ১৯টি করা হয়। তারা ভবনের চারপাশে অবস্থান নিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। এছাড়াও বাড়ির উপরের লোকজনকে উদ্ধারে ল্যাডার ইউনিট যুক্ত করা হয়েছে।
ভবনটির আতঙ্কিত বেশ কিছু বাসিন্দা ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে আগুনের কারণ জানা যায়নি বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বিকট শব্দ হয়ে বিদ্যুৎ চলে যায়। এতে বাসিন্দারা আটকে পড়েন। আগুন লাগার ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। এদের মধ্যে ১৪ জন ভবনের বাসিন্দা। আর বাকি তিনজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। আহতদের ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল ও মিটফোর্ড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, এখানকার প্রায় ভবনের নিচে কেমিক্যালের গোডাউন। আগে এই এলাকায় সব কেমিক্যাল গোডাউনই ছিল। ধীরে ধীরে মানুষের বসবাস শুরু হয়। ভবনও বহুতল হতে থাকে। এলাকাটি বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবেই বেশি পরিচিত।
ভবনটিতে ১৮টি পরিবার বসবাস করে। অতিরিক্ত ধোঁয়ার কারণে আশপাশের ভবন থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়। আটকে পড়া অনেককেই মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। গ্রিল কেটে, গ্রিল ভেঙে, জানালা ভেঙে, ছাদের দরজা ভেঙে আটকে পড়াদের উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে হাজির হন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন।
সানবিডি/এএ