ঠাকুরগাঁওয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৪-২৭ ১৫:২৪:২৩


ঠাকুরগাঁওয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ তুলে পুলিশের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের কালেশ্বরগাঁও সরকারপাড়া গ্রামের ভুক্তভোগী একটি পরিবার।

সোমবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে কালেশ্বরগাঁও সরকারপাড়া গ্রামে পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে ঠাকুরগাঁও শহরের একটি বাসায় এই অভিযোগ তুলে ধরেন মিঠু আহম্মেদ মিলন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন তাঁর চাচা সফিজুর রহমান ও চাচাতো ভাই মানিক আলী প্রমুখ।

তিনি লিখিত বক্তব্যে বলেন, গত ২২ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দেবীপুর ইউনিয়নের কালেশ্বরগাঁও সরকারপাড়া গ্রামে আমার চাচা মো. মমতাজ আলী (৬৫), চাচাতো ভাই মো. গোলাম রব্বানী (২৭) ও সাত্তার রহমান (৩৭) নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

এমন সময় ঠাকুরগাঁও থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জাবেদ আলীসহ ১০/১২ জনের পুলিশ সদস্য কোন কারণ ছাড়াই আমার চাচা ও ভাইদের তুলে নিয়ে আসে। থানায় আনার পরে মোবাইল ফোনে ১ লাখ টাকা খরচপাতি দাবি করে এবং বলে টাকা দিলে তাদের ছেড়ে দেয়া হবে। বিষয়টি দীর্ঘ সময় ধরে টালবাহানা করতে থাকে। পরে ওই দিন এলাকায় পুলিশ সার্জেন্ট সহিদুর রহমানের পরিবারের সাথে বসির উদ্দীনের পরিবারের মারামারি হয়। ওই মারামারির ঘটনা ও গম চুরির নাটক সাজিয়ে আমার চাচা ও ভাইদের আসামি দেখিয়ে মিথ্যা মামলা দেয় পুলিশ।

শুধু তাই নয়, আমার চাচাতো ভাই শরিয়তপুরে চাকুরীরত আর আমার এক চাচা পরিবার পরিজন নিয়ে পঞ্চগড় জেলার বোদা উপজেলার এক বাসায় থাকেন। তারপরেও তাদের আসামি দেখানো হয়েছে যা বসির উদ্দীন ও এলাকার মানুষকে জিজ্ঞাসা করলে জানা যাবে।

৭০ বছরের অধিক সময় ধরে আমাদের ভোগদখলীয় জমি, যার রেকর্ড, দলিল, খাজনা, খারিজ ও মাঠ পর্চা রয়েছে। সেই জমি ২০১৭ সালে পুলিশ সার্জেন্ট সহিদুর রহমান ও তার পরিবার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে জবর দখল করতে আসলে আমার বাবা, চাচা ও ভাইরা বাধা দিলে তাদের উপর হামলা চালিয়ে মারপিট ও জখম করে। তাদের উদ্ধার করে বোদা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো সহিদুরের পরিবারের দেয়া মামলায় হয়রানি করতে থাকে। এতে আমরা বাড়ি ছাড়া হই।
ঐ পুলিশ সার্জেন্ট ২০১৭ সালে বোদা হাইওয়ে থানায় কর্মরত থাকাকালীন কর্মস্থল থেকে তার বাড়ির দূরত্ব ৮/১০ কিলোমিটার হওয়ায় নিজ বাড়ি কালেশ্বরগাঁও সরকারপাড়া গ্রামে অবস্থান করতেন। সেই সময় তার এহেন কার্যকলাপে গ্রামের মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে উঠে। যা তথ্যাঅনুসন্ধান করলেই বেরিয়ে আসবে।

২০২০ সালে পুনরায় সেই জমি আবার জবর দখল করতে এসে আমার চাচা ও ভাইদের উপর হামলা ও মারপিট করে। এব্যাপারে থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। আমার পিতা নিরুপায় হয়ে সহিদুর রহমানকে ১নং আসামি করে আদালতে মামলা করেন। বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য সদর থানাকে নির্দেশ দেন। যার মামলা নং সিআর-৩১৩/২০ (জিআর-২৯৭/২০)। অপর দিকে ২০১৭ সালে আমার পিতা ও চাচা ইসমাইল হোসেনসহ অন্যরা বাদি হয়ে আদালতে একটি সিভিল মামলা দায়ের করেন, যা চলমান রয়েছে। কিন্তু মামলার বাদি ইসমাইল হোসেন মারা যাওয়ার পর পুলিশ সার্জেন্ট সহিদুর রহমান ও তার পরিবার জমি দখলের জন্য আবার তৎপর হয়ে উঠে।

উক্ত মামলা তুলে নিতে সহিদুর রহমান ও তার পরিবার মিথ্যা ও বানোয়াট ঘটনা সৃষ্টি করে থানায় একের পর এক মিথ্যা মামলা ও বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে এবং আমাদের দায়েরকৃত মামলা থেকে অব্যাহতি নিতে ঠাকুরগাঁও থানা পুলিশকে দিয়ে হয়রানি করছে।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই অবস্থার পরিত্রাণ পেতে সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এসময় জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে এধরনের ঘটনা হলে সেটা দুঃখজনক। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।