সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের দ্রুত মুক্তি দাবি বিএফইউজের
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-০৫-১৯ ১৪:০০:১৬
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। পাশাপাশি তাকে হেনস্তা করার এই ন্যাক্কারজনক গঠনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
বুধবার (১৯ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএফইউজের সভাপতি মোল্লা জালাল এ দাবি জানান।
মোল্লা জালাল বলেন, কোনো তথ্যের জন্য সাংবাদিকদের ফাইল ধরে টানাটানি করতে হয় না। সরকারের লোকেরাই সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে রোজিনাকে আটকে রেখে যেভাবে তাকে অপদস্থ করা হয়েছে, তা অমানবিক ও ন্যক্কারজনক। দুর্নীতির নানাবিধ অভিযোগে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করাসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রোজিনার বিষয়টির তাৎক্ষণিক নিষ্পত্তি করা সম্ভব ছিল। অথচ তা না করে রোজিনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের, থানায় আটকে রেখে কোর্টে প্রেরণ করার আদৌ প্রয়োজন ছিল। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে সব কর্মকাণ্ড করে তাকে জেলে পাঠানো হয়।
বক্তারা বলেন, দেশ ও জাতির স্বার্থে সঠিক তথ্য সরবরাহ করাই সাংবাদিকদের কাজ। এ কাজে সরকারের দায়িত্ব সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তানা করে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা নির্যাতনকারী হয়ে উঠলে তার দায় সরকারকেই বহন করতে হবে।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার ও তাকে হেনস্তা করার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে অবস্থান কর্মসূচিতে বিএফইউজের ৫ দফা দাবি-
১. সাংবাদিকরা কোনো তথ্যের জন্য ফাইল ধরে টানাটানি করে না। সরকারের লোকেরাই সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহ করে থাকে। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আনীত অভিযোগ হাস্যকর, অবান্তর ও উদ্দেশ্যণোদিত।
২. পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরাসহ তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা সরকারি কর্মচারীদের দায়িত্ব। তা না করে রোজিনা ইসলামের প্রতি দুর্নীতির নানাবিধ অভিযোগে অভিযুক্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে যে আচরণ করেছে তার দায় সরকার কোনভাবেই এড়াতে পারে না।
৩. আগামীকালের মধ্যে রোজিনাকে জামিনে মুক্তি দিতে হবে এবং সাংবাদিক নেতাদের সমন্বয়ে উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করে এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. তা না করা হলে, দেশের সব গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের সব সংগঠন, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেসক্লাবসহ সাংবাদিকদের অপরাপর সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে সারাদেশের সাংবাদিক, শ্রমিক-কর্মচারীদের নিয়ে বিএফইউজে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
৫. সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা করার ঘটনাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনায় নিয়ে ঘোলা জলে মাছ শিকারের অপচেষ্টা থেকে বিরত থাকার জন্য বিএফইউজে সব মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।
এ সময় বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব আবদুল মজিদ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি পদে কুদ্দুস আফ্রাদ ও সাধারণ সম্পাদক পদে সাজ্জাদ আলম খান, বিএফইউজের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, কোষাধ্যক্ষ দীপ আজাদ, দপ্তর সম্পাদক বরুণ ভৌমিক নয়ন, যুগ্ম মহাসচিব আবদুল মজিদ, নির্বাহী সদস্য শেখ মামুনুর রশীদ, নুরে জান্নাত আখতার সীমা, খায়রুজ্জামান কামাল, ডিইউজের সাবেক সভাপতি আবু জাফর সূর্য, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ডিইউজের সহসভাপতি এম এ কুদ্দুস, যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আলম, কোষাধ্যক্ষ আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ জিহাদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক আছাদুজ্জামান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক দুলাল খান, জনকল্যাণ সম্পাদক পদে সোহেলী চৌধুরী এবং দপ্তর সম্পাদক পদে জান্নাতুল ফেরদৌস চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।