জোয়ারের পানিতেই নাকাল সাতক্ষীরা উপকূলবাসী

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৫-২৭ ১১:১৮:৩১


ঘূর্ণিঝড় ইয়াস বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানেনি কিন্তু ঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরার উপকূলীয় এলাকায় নদীগুলোতে বিপৎসীমার পাঁচফুট ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।

এর আগেও ঘূর্ণিঝড় এসেছে কিন্তু সাতক্ষীরা উপকূলবাসীকে এতো নাকাল হতে হয়নি কখনো। এখন চলছে ভরা পূর্ণিমা। এই সময়ে নদীর পানির উচ্চতা স্বাভাবিকের থেকে ২/৩ ফুট বাড়ে। তারপর আবার মড়ার পরে খাঁড়ার ঘাঁ হয়ে দেখা দিয়েছে ইয়াসের প্রভাব।

পূর্ণিমা ও ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবে বাঁধ উপচে পানি ঢুকে পড়েছে লোকালয়ে। শুধু তাই নয় ভাটা শুরু হলেও কমেনি নদীর পানি।

বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১টার দিকে জোয়ারে পানির চাপে ভেঙে গেছে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের তিনটি পয়েন্টের বাঁধ। এতে প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।

এছাড়া বুড়িগোয়ালিনী, পদ্মপুকুর ও মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কয়েকটি পয়েন্টে বাঁধ উপচে লোকালয়ে লবণাক্ত পানি ঢুকতে শুরু করেছে।

অন্যদিকে, আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাউনিয়া, হরিশখালিসহ প্রতাপনগর ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টও একই অবস্থা।

গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুল আলম বলেছেন, লেবুবুনিয়াসহ তিনটি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে। নদী উত্তাল থাকায় ও বৃষ্টি হওয়ায় আমরা এসব এলাকায় এখনো পৌঁছাতে পারিনি।

মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মোড়ল জানিয়েছেন, কদমতলা ও হরিনগরের তিনটি পয়েন্ট বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকছে।

বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মণ্ডল স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের বলেন, দাতিনাখালি এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালয় পানি প্রবেশ করছে। দুর্গাবাটি বাঁধটি যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল খায়ের বলেন, বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ উপচে লবণাক্ত পানি ঢোকার খবর পেয়েছি। বাঁধ ভাঙার খবর এসেছে তিনটি জায়গা থেকে। নদী এখনো উত্তাল থাকায় আমরা ওইসব এলাকায় পৌঁছাতে পারিনি।

ইয়াস সাতক্ষীরা উপকূলে স্পর্শ না করে চলে গেলেও রেখে গেছে প্রশ্ন। সামান্য প্রভাব ও পূর্ণিমায় যদি বাঁধের এই ভঙ্গুর দষা দেখতে হয় তাহলে আগামীতে সিডর, আইলা, আম্পান বা অন্য কোন ইয়াস যদি তান্ডব চালায় তখন সাতক্ষীরা উপকূলের হাল কি হবে! সরকার প্রশাসন কিভাবে ঠেকাবে সেসময়ের মৃত্যুর মিছিল!

সাতক্ষীরা উপকূলবাসী তাই জোরালো দাবী জানাচ্ছে এলাকার মানুষের জানমাল রক্ষার্থে সরকার উদ্যোগী হোক সেকসই বাঁধ নির্মাণে।