ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টি নেই লালমনিরহাটে, সেচ দিয়ে চলছে কৃষিকাজ

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-০৮-০৬ ১৩:০৬:৩৪


বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে অতিবৃষ্টিতে দেশের উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। অথচ ভরা বর্ষা মৌসুমেও উত্তরের জেলা লালমনিরহাটে বৃষ্টির দেখা নেই। প্রকৃতির এ বিরুপ আচরণে চিরচেনা বর্ষা মৌসুম যেন এখন শুধুই কাগুজে।

ফলে পানির অভাবে জেলার কৃষকরা আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারছেন না। ডোবা-নালায় পর্যাপ্ত পানি না থাকায় পাট জাগ দিতেও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে কৃষক। ফলে বর্ষা মৌসুমেও জমিতে সেচ দিতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। অন্যদিকে জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ না হওয়ায় উদ্বিগ্ন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারাও।

লালমনিরহাট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা খায়রুল ইসলাম বলেন, গত বছর বর্ষা মৌসুমে জেলায় ৮৭ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে চাষ হয়েছিল ৮৫ হাজার ৫৭৫ হেক্টর। বৃষ্টির পানির অভাবে ১ হাজার ৬২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করতে পারেননি কৃষকরা। এ বছর জেলায় ৮৫ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল (৫ আগস্ট) পর্যন্ত ৫১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়েছে।

বৃষ্টির পানির অভাবে ডিজেলচালিত শ্যালো ইঞ্জিন ও বৈদ্যুতিক মোটর দিয়ে সেচের মাধ্যমে ৩৪ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করার চেষ্টা করছেন কৃষকরা।

তিনি বলেন, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে গেছে, শ্রাবণও অর্ধেক চলে গেছে। এখন যদি প্রাকৃতিক নিয়মে বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে এবারো কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রার জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হবে না। এছাড়া এ বছর ৪ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। কিন্তু কৃষকরা পানির অভাবের কারণে পাট পচাতে পারছে না বলেও জানান তিনি।

কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, আমার ৩ একর জমির মধ্যে এক একর আমন ধানের চারা রোপণ করতে পেরেছি। এখন দুই একর জমি পানির অভাবে ধানের চারা রোপণ করতে পারছি না। কিছু জমিতে ডিজেলচালিত শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে চাষ করার চেষ্টা করছি। অন্য সবার একই বক্তব্য তারা সকলেই তাদের তিন ভাগের এক ভাগ জমিতে ধান রোপন করতে পেরেছেন।

লালমনিরহাট খামারবাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) শামীম আশরাফ বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যস্ততা মাথায় নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা ও কাজ বাস্তবায়ন করতে হবে। এখন পর্যন্ত ৬০ শতাংশ জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করা হয়েছে। বাকি জমিতে আমন ধানের চারা রোপণ করতে সেচ দিতে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সানবিডি/আরএইচ