নদীপথে বাণিজ্য দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৯-০৮ ১৮:১৫:০৪


করোনা পরবর্তী বৈশ্বিক বাস্তবতায় নদীপথে বাণিজ্য বৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর জন্য আরও বেশি জরুরি হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন- “অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য বিনিয়োগের ৮০ শতাংশই হচ্ছে উন্নত দেশগুলোতে। অন্যদিকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বৈদেশিক বিনিয়োগ কমেছে ১২ শতাংশ। এ অবস্থায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্য সহযোগিতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। আর এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে নদীপথে পণ্য পরিবহণ অবশ্যই সহজতর করতে হবে।”

মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত ‘রিজিওনাল কো-অপারেশন ডায়লগ সিরিজ’-এর প্রথম পর্বে “প্রমোটিং ইনল্যান্ড ওয়াটারওয়েজ: প্রসপেক্টস এন্ড চ্যালেঞ্জেস” শিরোনামে ওয়েবিনারের উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। উন্নয়ন সমন্বয়ের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই ওয়েবিনারে সংস্থার পক্ষ থেকে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করের রিসার্চ এসোসিয়েট- অয়ন সুফি।

ভূটান, বাংলাদেশ ও ভারত থেকে নদীপথে বাণিজ্য বিষয়ক গবেষক, নীতি-নির্ধারক এবং ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তারা আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচনায় বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের নির্বাহী সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দীন আহমেদ, বীর বিক্রম বলেন, নদীপথে বাণিজ্য সহজিকরণ সম্ভব হলে এ অঞ্চলের সকল দেশই যেহেতু তার সুবিধাভোগী হবে তাই সকল পক্ষের সম্মিলিত অংশগ্রহণ বিশেষত আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিদের ভূমিকা এক্ষেত্রে বিশেষ জরুরি।

কলকাতার বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর পরিচালক সোমা মিত্র পশ্চিমবঙ্গের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নদীপথে পণ্য পরিবহন সহজতর করার মাধ্যমে বেনাপোল স্থলবন্দরের ওপর চাপ কমানোর সম্ভাবতা তুলে ধরেন। বিআইডব্লিউটিএ- এর সাবেক পরিচালক সৈয়দ মনোয়ার হোসেন নদীপথে বাণিজ্যের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য হালনাগাদ ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।

ভারতের কাটস্ ইন্টারন্যশনাল-এর পলিসি অ্যানালিস্ট অর্ণব গাঙ্গুলি মনে করেন, নদীপথে বাণিজ্যে ব্যবসায়ীদের আস্থা বাড়াতে বেশি বেশি পাইলট ভয়েজ পরিচালনা করে ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করা এবং সে অনুসারে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞ পৃথ্বীরাজ নাথ বলেন, নদীপথে বাণিজ্য সহজিকরণের উদ্যোগ গ্রহণের সময় অবশ্যই এসব উদ্যোগের পরিবেশগত এবং সামাজিক প্রভাবের দিকগুলো আলাদাভাবে বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।

প্যানেল আলোচকদের মধ্যে আরও ছিলেন ভারতভিত্তিক কাস্টমস হাউজ এজেন্ট দেবজ্যোতি বসু, বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়, ভারতের রিভারাইন শিপিং এন্ড লজিস্টিকস-এর স্বত্তাধিকারি নিত্য সাহা, বাংলাদেশের গল্ফ ওরিয়েন্ট সিওয়েজ লি:-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মাহফুজ হামিদ, এবং বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরওয়ার্ডিং এসোসিয়েশন-এর সভাপতি কবির আহমদে। ওয়েবিনারে ধন্যবাদ বক্তব্য রাখেন উন্নয়ন সমন্বয়ের সিনিয়র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর শাহীন উল আলম।

এএ