বিশ্ব ওজোন দিবসের বিশেষ আলোচনা

পরিবেশ সুরক্ষায় সবার চেয়ে এগিয়ে ওয়ালটন

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৯-১৮ ২১:২৭:২১


ওজোনস্তর ক্ষয়রোধ এবং বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশের ইলেকট্রনিক্স জায়ান্ট ওয়ালটন। পরিবেশবান্ধব ও বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য উৎপাদন, বাজারজাত ও রপ্তানি করছে তারা।

ওয়ালটন কারখানায় ‘বিশ্বের প্রথম এইচএফসি ফেজ আউট’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। সম্প্রতি চালু করেছে এইচসিএফসি ফেজ আউট প্রকল্প। এসব প্রকল্প বায়ুমণ্ডলে বিপুল পরিমাণ ক্ষতিকারক পদার্থের নিঃসরণ হ্রাস করে ওজোনস্তর সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মোটকথা পরিবেশ সুরক্ষায় সবার চেয়ে এগিয়ে আছে ওয়ালটন।

শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ওয়ালটন করপোরেট অফিসের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ‘বিশ্ব ওজোন দিবস-২০২১’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা। আন্তর্জাতিক ওজন দিবস উপলক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড যৌথভাবে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

পরিবেশ অধিদপ্তর এবং ওয়ালটনের আয়োজনে বিশ্ব ওজোন দিবস-২০২১ এর বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠানে অতিথিরা।

ওজোনস্তরের ক্ষয়রোধ ও বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণে বিশ্বব্যাপী সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতি বছর ১৬ সেপ্টেম্বর পালিত হয় বিশ্ব ওজোন দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো- ‘মন্ট্রিল প্রটোকল মেনে ওজোন স্তর রক্ষা করি, নিরাপদ খাদ্য ও প্রতিষেধকের শীতল বিশ্ব গড়ি’। দিবসটি উপলক্ষ্যে এ প্রতিপাদ্যকে নিয়ে শনিবার ওয়ালটনে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ আলোচনা সভা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন একই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রেজভী এবং ভাইস চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম। পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আশরাফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মো. জিয়াউল হক, সিনিয়র অফিসার (ওজোন সেল) ড. সত্যেন্দ্র কুমার পুরকায়স্থ প্রমুখ।

সেসময় যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর আবুল বাশার হাওলাদার, ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর নজরুল ইসলাম সরকার, এমদাদুল হক সরকার, ইভা রেজওয়ানা নিলু, হুমায়ূন কবীর, শোয়েব হোসেন নোবেল ও আলমগীর আলম সরকার, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এস এম জাহিদ হাসান, উদয় হাকিমসহ পরিবেশ অধিদপ্তর, ইউএনডিপি বাংলাদেশ এবং ওয়ালটনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপিকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রেজভী।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘পৃথিবী ও প্রাণিজগতের জন্য ওজোনস্তর আশির্বাদ। এটি পৃথিবীর ফিল্টার। কিন্তু ক্ষতিকর কেমিক্যাল ও গ্যাসের ব্যবহারে তা ধ্বংস হচ্ছে। ওজোনস্তর রক্ষার জন্য আটটি ক্ষতিকর পদার্থের ব্যবহার বন্ধে ১৯৮৭ সালে কানাডার মন্ট্রিলে স্বাক্ষরিত হয় বিশ্ব চুক্তি। ‘মন্ট্রিল প্রোটোকল’ খ্যাত ওই চুক্তিতে অনুস্বাক্ষরিত দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ। মন্ট্রিল প্রোটোকলের আওতায় বর্তমানে ১০০টির মতো ওজোন ক্ষয়কারী দ্রব্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কাজ চলছে। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতে ওয়ালটন ব্যাপক অবদান রেখে চলেছে।

বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধকল্পে ওয়ালটনের নেওয়া প্রকল্পগুলোর ফলে ৫৪৩ হাজার টন কার্বন নিঃসরণ হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে ৩০ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়েছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশ সংরক্ষণে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালে জাতীয় পরিবেশ পদক পেয়েছে ওয়ালটন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ওজোনস্তরের সুরক্ষায় ওয়ালটনের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপিকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম।

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার একটি সবুজ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়ায় অঙ্গীকারবদ্ধ। ওয়ালটনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং দেশের আপামর মানুষকে নিয়ে আমরা পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নিরলসভাবে কাজ করছি।’

উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার এমপি বলেন, ‘ওজোনস্তর তথা পরিবেশ সুরক্ষায় ওয়ালটন সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছে। শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বহু দেশে ওয়ালটনের পণ্য পৌঁছে গেছে। পরিবেশ সুরক্ষায় ওয়ালটনের নেওয়া পদক্ষেপ অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্যও অনুকরণীয়।’

অনুষ্ঠানে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান এস এম নূরুল আলম রেজভী বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত কল্পে বাংলাদেশে উৎপাদিত এবং আমদানিকৃত সব এয়ার কন্ডিশনারে স্টার রেটিং ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।

এএ