দেনা পরিশোধে ইভ্যালির সঙ্গে কথা বলবেন বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-০৯-২২ ২০:০৮:৫৫


ভুক্তভোগীদের দেনা পরিশোধে ইভ্যালির সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, ইভ্যালির ৫০০ কোটি টাকার দায় আছে। অর্ধেক কাস্টমার, অর্ধেক মার্চেন্টদের। শুনেছি তাদের ৮০/৯০ কোটি টাকার সম্পদ আছে। তাদের চিন্তা-চেতনা কী, সেটা জানার চেষ্টা করবো। এগুলো আজকের আলোচনায় এসেছে। ইভ্যালির মতো প্রতিষ্ঠানের টাকা শোধের অ্যাবিলিটিই নেই। তারা প্রচারের জন্য ব্যাপক টাকা বিনিয়োগ করেছে। ক্রিকেট খেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় টাকা নষ্ট করেছে।

বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকালে ডিজিটাল কমার্স ব্যবসায় সাম্প্রতিক সমস্যা বিষয়ে আলোচনা সভা শেষে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী। সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের (ইভ্যালি) সঙ্গে কথা বলবো। তাদের কী পরিমাণ সম্পদ আছে, সেই সম্পদ দিয়ে কতটুকু অ্যাড্রেস করতে পারবে। আগামীতে যাতে মানুষ আর প্রতারিত না হয় এবং যেটা ঘটেছে, তদন্ত করে কতটুকু তারা পরিশোধ করতে পারে, কতটুকু তাদের কাছে আছে, সেটা নিয়ে এসে মানুষের দায় কতটুকু পরিশোধ করতে পারবে, সেটি শুনতে হবে।

টিপু মুনশি আবারও বলেন, ই-কমার্স মালিক-কর্মকর্তা বা উদ্যোক্তাদের জেলে ভরে রাখলে তো গ্রাহকরা কিছু পাবে না। আবার কিছু না থাকলে বের করলেও লাভ হবে না। দেশে দুই হাজার ব্যবসায়ীও ছিল না, এখন দুই লাখ ব্যবসায়ী হয়েছে। যে সমস্যা হয়েছে, সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করছি। ১০/১২টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। এছাড়াও আলেশা মার্ট চেষ্টা করছে, আমরা তাদের ওপর নজরদারি রাখছি।

মন্ত্রী বলেন, কিছু ঘটনা ঘটে গেছে। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের মালিক জেলে আছে। আরও কিছু কোম্পানির কেউ কেউ পালিয়েছে। আমাদের কাছে রিপোর্ট আছে, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত অনেক নারীও ই-কমার্সে যুক্ত হয়েছে। তাই ই-কমার্স বন্ধ করা যাবে না। যারা প্রতারণা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেটি একটি বিষয় এবং সামনে কীভাবে চলা যায়, সেটিও একটি বিষয়।

মন্ত্রী বলেন, গত ৪ জুনের আগে ছয় হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এখন বাকি চার মাসে ৬০০ কোটি টাকা স্ক্রো ফান্ডে জমা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ১২ টাকার জিনিস ১ টাকায় দেওয়া যায় না। এ ধরনের বড় কোম্পানিকে এখন থেকে সতর্কীকরণ বার্তা দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের কাজ ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা। কিন্তু তারা যে মানুষকে লোভ দেখাচ্ছে, সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দেখবে না। ১০০ টাকার জিনিস তারা ৫০ টাকায় দিতে চায়, সেটা কীভাবে সম্ভব? মানুষ লোভ সামলাতে না পেরে ফাঁদে পা দিয়েছে, তাদের লোভ সংবরণ করা উচিত।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, আজকের বৈঠকে বেশকিছু আলোচনা হয়েছে। কেউ কেউ ই-কমার্স ব্যবসা বন্ধের প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত হয়েছে কয়েকটি খারাপ প্রতিষ্ঠানের জন্য ই-কমার্স বন্ধ করা ঠিক হবে না। কিছু সুপারিশ এসেছে, সেগুলো হলো ই-কমার্স ব্যবস্থাপনার জন্য ই-কমার্স রেগুলেটরি কমিটি করতে হবে। ডিজিটাল কমার্স আইন করতে হবে।

সচিব আরও বলেন, যে অভিযোগ আসছে, সেগুলো বিভিন্নভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে, তাই সব কমপ্লেইন মনিটরিংয়ের কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হবে। যারা ইতোমধ্যে যে অপরাধ করেছে, প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সেজন্য আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে। ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধন নিতে হবে, নিবন্ধন ছাড়া ব্যবসা করা যাবে না।

এএ