রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পরিবর্তনের ক্ষমতা কারো নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১০-১৬ ১৯:৫২:৫৭


জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের এমপি বলেছেন, ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পরিবর্তন করার সাহস আর ক্ষমতা কারো নেই।’ তিনি বলেন, সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে কটূক্তি করে ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পরিবর্তন করার ঘোষণা দিয়ে গর্হিত কাজ করেছেন। এ জন্য তাকে ক্ষমা চাইতে হবে।’ ‘ওই প্রতিমন্ত্রী সংবিধান সংরক্ষণের শপথভঙ করেছেন’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয় মিলনায়তনে গাজীপুর মহানগর ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সাথে মতবিনিময় সভায় জি এম কাদের এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু এরশাদ ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে। জি এম কাদের বলেন, ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনী করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার। তাতেও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সমুন্নত আছে। তাই কটূক্তি করে ওই প্রতিমন্ত্রী আওয়ামী লীগের দলীয় শৃঙ্খলাও ভঙ করেছেন। তাকে অবশ্যই ক্ষমা চাইতে হবে। না হলে দেশের মানুষ একদিন এর বিচার করবে।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ঘোষণার সাথে সকল ধর্মের অধিকার সাংবিধানিকভাবেই নিশ্চিত করেছিলেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম পরিবর্তন করার সাহস আর ক্ষমতা কারো নেই।

এ সময় গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, বর্তমান সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়। বর্তমান সংবিধান গণতান্ত্রিক চর্চার সাথে সাংঘর্ষিক। তিনি বলেন, গণতন্ত্র চর্চা করতে হলে সংবিধানের অনেক ধারা সংশোধন করতে হবে। সংবিধানের ৭০ ধারার কারণে সরকার দলীয় কোনো সংসদ সদস্য সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করতে পারে না। এতে এক ব্যক্তির হাতে সকল ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়েছে। দেশের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা ও রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রায় ৯০ ভাগই সরকার প্রধানের নিয়ন্ত্রণে। তাই সরকার প্রধান যা চাইবেন, তার বাইরে কিছুই সম্ভব নয়।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে সংবিধান অনুযায়ী আইন করতে হবে। আইন না করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হচ্ছে, ফুটবল খেলায় একটি দলের পক্ষ থেকে রেফারি নিয়োগ দেয়ার মতো। আইন করে উপযুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করে সংবিধান অনুযায়ী সকল ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে।

নিবন্ধিত প্রায় ৪০টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে মাত্র আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সক্রিয় আছে উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, বাকি দলগুলো সাইনবোর্ড বা নেতা সর্বস্ব রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।

৩১ বছর রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে থেকেও জাতীয় পার্টি রাজনীতিতে টিকে আছে বলেও উল্লেখ করেন দলটির চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, নানা অপবাদ ও ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে জাতীয় পার্টি এগিয়ে চলছে।

এ সময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপিসহ আরো বক্তব্য রাখেন- পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা, অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, অ্যাডভোকেট মো: রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে সভপতিত্ব করেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এম এম নিয়াজ উদ্দিন। উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মনিরুল ইসলাম মিলন, অ্যাডভোকেট লাকী বেগম, অ্যাডভোকেট জহিরুল হক জহির, ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, যুগ্ম মহাসচিব গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মো: বেলাল হোসেন, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সম্পাদকমন্ডলী আনোয়ার হোসেন তোতা, মাখন সরকার, এম এ রাজ্জাক খান ও চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি-২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী প্রমুখ।

এএ