সিরাজগঞ্জে তেলের গোডাউনে অগ্নিকান্ড, কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-১০-২৬ ১৭:১০:৫৭


সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের বাঘাবাড়িতে তেলের গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি তবে প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

জানা যায়, সোমবার (২৫ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ১১টায় বাঘাবাড়ি নদী বন্দর ও অয়েল ডিপোর প্রধান ফটকের ৫০ গজ সন্নিকটে ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বাঘাবাড়ি বন্দর ফায়ার সার্ভিসের অগ্নি নির্বাপক দল দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।

পরে রাত পৌনে ১২টায় শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও বেড়া ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্রায় দেড় ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে রাত আনুমানিক দেড়টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় বিপুল সংখ্যক উৎসুক জনতা ঘটনাস্থলে ভীড় করে, জনতার ভিড়ের ফলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হয়।

ইউনুস আলী নামের স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, রুমী মটরস নামের একটি দোকান ও তেলের গোডাউনে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে পাশের রঞ্জু ইনজিনিয়ারিং, রয়েল ব্যাটারি, একটি টায়ারের গোডাউন ও পাশের ইসরাফিল নামের একজনের বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি দাহ্য পদার্থের দোকান হওয়ার ফলে আগুন ব্যাপক আকার ধারণ করে এবং পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দোকানে ছড়িয়ে পরে। এসময় গোডাউনের পাশে রাখা একটি তেলের ট্যাঙ্কি ও ২টি পিকআপ ভ্যানে আগুন লাগে।

জানা যায়, প্রতিটি দোকান ও গোডাউনে প্রচুর পরিমাণ দাহ্য জাতীয় পদার্থ যেমন পেট্রোল, মবিল, ডিজেল, অকটেন, গ্যাস সিলিন্ডার, টায়ার ও রং মজুদ করে রাখা ছিল।

উল্লেখ্য, বাঘাবাড়ির আগ্নিকান্ডের ঘটনাস্থলের ২০০ মিটারের মধ্যে একটি নদীবন্দর, অয়েল ডিপো ও মিল্ক ভিটা। এবং আশপাশে বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে প্রায় শতাধিক তেলের দোকান ও গোডাউন রয়েছে।

শান্ত নামের স্থানীয় একজন বাসীন্দা জানান, অগ্নিকান্ডের শুরুতেই রাত সোয়া ১১টায় ৩ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত শাহজাদপুর ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে তারা আসতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তারা বাঘাবাড়ি বন্দর ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে বলে। প্রথমেই যদি শাহজাদপুরের ইউনিটটি আসতো তাহলে এতো পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হতো। এই অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দোকান মালিকরা নিস্ব হয়ে গেছে।

ফায়ার সার্ভিসের পাবনা ও সিরাজগঞ্জ রিজিয়ন সহকারি পরিচালক মোঃ দুলাল মিয়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে রাত আনুমানিক পৌনে ১২টায় প্রথমে বাঘাবাড়ি ফায়ার সার্ভিস ও শাহজাদপুর ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এরপর উল্লাপাড়া ও বেড়ার ফায়ার সার্ভিসসহ মোট ৭টি ইউনিট অগ্নি নির্বাপনে কাজ করে।

আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে দেরি হওয়ার কারণ তিনি উল্লেখ করেন, এগুলো পেট্রল, অকটেন, ডিজেল, মবিল, ব্যাটারি ও টায়ারের দোকান হওয়ার কারনে আগুন নেভাতে দেরি হয়েছে। এবং রুমি মটরসের ফায়ার লাইসেন্স করা আছে কিনা তদন্ত করে দেখা হবে। এবং আশপাশে বৈধ ও অবৈধ মিলিয়ে এই এলাকায় প্রায় শতাধিক দাহ্য জাতীয় পদার্থের দোকান রয়েছে। এসকল দোকানকে নজরদারির আওতায় আনা হবে।

সানবিডি/ এন/আই