উদ্ভাবনী প্রযুক্তিশিল্পের বিকাশ ঘটলে দেশ এগিয়ে যাবে: গোলাম মুর্শেদ
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১০-৩০ ১৮:৫৬:১১
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুর্শেদ বলেছেন, ‘উদ্ভাবনী শক্তি যখন প্রযুক্তিশিল্পের বিকাশ ঘটাবে, তখনই বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির স্বপ্ন ও সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিশেষ কিছু কারণে স্বাধীনতার পর আমরা সে সুযোগ পাইনি। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দূঢ় ইচ্ছা ও চেষ্টায় বাংলাদেশ আজ অন্য উচ্চতায় যাচ্ছে। ওয়ালটন বাংলাদেশের প্রযুক্তিশিল্পকে এগিয়ে নিচ্ছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন, বর্তমান সরকারের উন্নয়ন এবং ওয়ালটনের ১২ বছরের যাত্রা একইভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ওয়ালটন বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে, সে প্রত্যাশা নিয়ে আমরা কাজ করছি।’
শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ অডিটোরিয়ামে ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ)-২০২১’ প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালেতে এসব কথা বলেন গোলাম মুর্শেদ।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আইডিয়া প্রকল্প এ আয়োজন করে। স্টার্টআপ ও ইনোভেটরদের নিয়ে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতার স্পন্সর ছিল বাংলাদেশি সুপারব্র্যান্ড ওয়ালটন। প্রতিযোগিতার সেরা স্টার্টআপকে ১ লাখ ইউএস ডলার পুরস্কার দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
বিশেষ অতিথি ছিলেন—তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুল মান্নান এবং আইডিয়া প্রকল্পের পরিচালক আব্দুর রাকিব, ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর লিয়াকত আলী প্রমুখ।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বৈষম্যমুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে প্রযুক্তিকে হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন।’
প্রযুক্তি খাতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম ও সাফল্যের কথা তুলে ধরে প্রতি বছরই ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ)’ আয়োজন করা হবে বলে জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। তিনি এ ধরনের আয়োজনে যুক্ত হওয়ায় ওয়ালটন কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে গোলাম মুর্শেদ আরও বলেন, ‘সৃষ্টি, সুখ, উল্লাস—এ তিনটির সমন্বয়ে উদ্ভাবনী শক্তি। স্টার্টআপ ও ইনোভেটরদের নিয়ে এমন আয়োজন যদি আরও ১৫ বা ২০ বছর আগে হতো, তবে ওয়ালটনের মতো আরও অন্তত ২৬টি প্রতিষ্ঠান এখন বাংলাদেশে থাকত। আজকের ২৬টি স্টার্টআপ এক যুগের মধ্যে যখন এমন আরও ২৬টি ইভেন্টে স্পন্সর করতে সক্ষম হবে, তখনই এ আয়োজন সফল হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘২৬ সংখ্যাটি আমাদের স্বাধীনতার সঙ্গে সম্পর্কিত। ওয়ালটন পরিবারের পক্ষ থেকে আজকের ২৬টি স্টার্টআপকে প্রযুক্তিযুদ্ধে স্বাগতম। তাদের যেকোনো সহযোগিতা ও বিকাশে ওয়ালটন পাশে থাকবে। স্টার্টআপগুলো ইউনিকর্নের মতো। যার প্রতীক হলো পিউরিটি, ফ্রিডম, ইনডিপেনডেন্স অ্যান্ড ম্যাজিক। আমার প্রত্যাশা, এই ২৬টি স্টার্টআপ সেই ম্যাজিক দেখাবে। তারা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে। ওয়ালটন পরিবারের পক্ষ থেকে তাদের অভিনন্দন ও শুভকামনা।’
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১ (বিগ)’ প্রতিযোগিতায় সারা দেশ থেকে ৭ হাজারেরও বেশি এবং বিদেশ থেকে ২৫৫টি স্টার্টআপ জমা পড়ে। এর মধ্যে দুই দফায় বাছাই শেষে ৬৫টি দেশীয় স্টার্ট-আপকে বেছে নেওয়া হয়। তাদের মধ্য থেকে সেরা ২৬টি স্টার্টআপ বেছে নেওয়ার জন্য হয় ১৩ পর্বের একটি বিশেষ রিয়েলিটি শো ‘বিগ-২০২১’।
এর পর নির্বাচিত ২৬টি স্টার্ট-আপের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে নির্বাচিত ১০টি এবং আইডিয়া প্রকল্পের আওতাভুক্ত পোর্টফলিও থেকে আরও ১০টি স্টার্টআপসহ মোট ৪৬টি উদ্যোগকে গ্র্যান্ড ফিনালের জন্য মনোনীত করা হয়।
প্রতিযোগিতার ফাইনালে এগুলোর মধ্য থেকে মোট ৩৬টি স্টার্টআপকে চূড়ান্ত বিজয়ী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। বিজয়ী প্রতিটি স্টার্টআপকে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকা করে অনুদান। এদের মধ্য থেকে ‘ওপেন রি ফ্যাক্টারি’কে বেছে নেওয়া হয় সেরাদের সেরা স্টার্টআপ হিসেবে। যা পায় ‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট ২০২১ (বিগ)’ এর বিশেষ সম্মাননা এবং ১ লাখ ইউএস ডলার পুরস্কার।
এএ