‘শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন মাইলফলক’

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১০-৩১ ১৯:১৬:৫৩


বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশের শেয়ারবাজারে পাইলটিংয়ের আওতায় বিভিন্ন মেয়াদি ৪টি সরকারি সিকিউরিটিজের (ট্রেজারি বন্ড) লেনদেন শুরু হয়েছে। এটি আমাদের শেয়ারবাজারের জন্য মাইলফলক ও দুর্দান্ত বিষয়। কারণ আমাদের প্রচুর সরকারি বন্ড রয়েছে। তবে তা কিছু মানুষের কাছে মজুত রয়েছে। তাই সাধারণ মানুষ যাতে লেনদেন করতে পারে সে লক্ষ্যে শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজ চালু করা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রোববার (৩১ অক্টোবর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে সিএসইতে ট্রেজারি বন্ডের (সরকারি সিকিউরিটিজ) পরীক্ষামূলকভাবে লেনদেনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম। এছাড়া অনুষ্ঠানে অর্থ মন্ত্রণালয়, বিএসইসি, সিএসই, সিডিবিএল, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউজ, মার্চেন্ট ব্যাংক ও অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ারবাজারকে আরও বৈচিত্র্যময়, পরিধি ও গভীরতা বাড়ানোর জন্য শেয়ার বাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন চালু করা দরকার ছিল। সিকিউরিটিজ ও বন্ডের জন্য দেশে একটি দ্বিতীয় বাজারের চাহিদা অর্থনীতির সবসময়ই ছিল। আর এই যুগেই আমার আছি। সুতরাং বিষয়টিকে চূড়ান্ত ভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন করা খুব দরকার।

তিনি বলেন, আমরা নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্পূর্ণরূপে এই প্রোগ্রামটি শুরু করতে সক্ষম হব বলে আশা করছি। আমাদের এখনও এক সপ্তাহ সময় আছে। আমি সেই অপেক্ষায় আছি। এ কাজের জন্য স্টক এক্সচেঞ্জে কিছু সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট প্রয়োজন। আমি নিশ্চিত যে, আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ সেই বিষয়ে কাজ করেছেন। আমি আগামী সপ্তাহের মধ্যে আপনাদের সবার একটি চমৎকার প্রস্তুতি কামনা করছি। নিশ্চিত ও চূড়ান্তভাবে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের পক্ষ থেকে সব সহযোগিতা আপনাদের নিশ্চিত করা হবে।

শামসুদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজের লেনদেন পুরোপুরিভাবে চালু করার আগে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন। সব স্টেকহোল্ডাররা যাতে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিএসইসির কমিশনার বলেন, শেয়ারবাজারে সরকারি সিকিউরিটিজ চালু করার জন্য সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এজন্য আমি আবারও সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আজকের অনুষ্ঠানে সিএসইর চেয়ারম্যান, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, স্টক এক্সচেঞ্জ, সিডিবিএলসহ সব স্টেহোল্ডারদের পেয়ে আমি আনন্দিত।

স্বাগত বক্তব্যে সিএসই এর চেয়ারম্যন জনাব আসিফ ইব্রাহীম বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশে উন্নীত হওয়ার স্বপ্ন দেখছি। এই স্বপ্ন পূরণের জন্য আমাদের প্রয়োজন অত্যন্ত দক্ষ, বলিষ্ঠ ও শক্তিশালী পুঁজিবাজার। সরকারের দ্বারা এককভাবে Sustainable Development Goals (SDG) অর্জন করা সম্ভব নয়। SDG অর্জনে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে SDG তে অর্থায়নের জন্য বাংলাদেশের ৯২৮.৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিরিক্ত অর্থায়নের প্রয়োজন হবে। Money Market এই বাড়তি অর্থের যোগান দিতে পারবে না । এই অতিরিক্ত অর্থ জোগানের সবচেয়ে ভালো উৎস হলো Capital Market। বন্ড বাজার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য অর্থায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। আমাদের বাংলাদেশে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্বমানের বন্ড মার্কেট বাস্তবায়ন করতে হবে। বাংলাদেশে একটি সক্রিয় Bond Market-এর বিকাশ আর্থিক অবকাঠামো গভীর করার ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী সুফল বয়ে আনবে।

এটি দেশে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সাহায্য করবে এবং স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের তাদের সম্পদ বরাদ্দ প্রক্রিয়া আরও ভালভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রণোদনা প্রদান করবে।

এএ