সেন্সর বোর্ডে পুলিশি আতংক!

প্রকাশ: ২০১৬-০২-০১ ০৯:০৫:৫৩


bg_censorপুলিশ আতংকে ভুগছেন নির্মাতারা। বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডে খোঁজ নিয়ে সম্প্রতি এমন তথ্যই জানা গেল। নাটক কিংবা সিনেমা নির্মাণের ক্ষেত্রে গেল বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়। যেখানে উল্লেখ ছিল, পুলিশের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো নাটক কিংবা চলচ্চিত্রে পুলিশের উপস্থিতি রাখা যাবে না।

মূলত টিভি নাটক ও সিনেমায় পুলিশের নেতিবাচক ও হাস্যরসাত্মক উপস্থাপনা ঠেকাতেই এমন নির্দেশনা জারি করা হয়। যদিও পুলিশের এমন নির্দেশনা জারির আগে থেকেই চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড পুলিশকে নেতিবাচক উপস্থাপনার ব্যাপারে সতর্ক ছিল। ইদানীং বিষয়টি আরও প্রকট আকার ধারণ করেছেন বলেই খবর পাওয়া গেছে। পুলিশকে হেয় করা হয়েছে, এমন কোনো দৃশ্য ছবিতে রাখতে আপত্তি প্রকাশ করছে সেন্সর বোর্ড।

ছবিতে সাধারণত যা কিছু দেখানো হয় সেটা কাল্পনিক। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য সেটা আলাদা। তবুও পার পাচ্ছেন না নির্মাতারা। পুলিশ সংশ্লিষ্ট স্পর্শকাতর কোনো কিছু থাকলেই সেন্সর ছাড়পত্র দিতে অপারগতা প্রকাশ করছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ।

যার প্রমাণ পাওয়া গেছে গেল ঈদের বেশ কয়েকটি ছবি থেকে। ‘রাজাবাবু’ ছবিতে পুলিশকে লাথি মারার একটি দৃশ্য, ‘পাকড়াও’ ছবির একটি দৃশ্যে একজন পুলিশ অফিসারের তলোয়ার নিয়ে মারামারির দৃশ্য, ‘নগর মাস্তান’ ছবিতে থানায় মারামারির দৃশ্য- সবগুলোই আইনের দোহাই দিয়ে কর্তন করে সেন্সর বোর্ড। এছাড়াও ‘ব্ল্যাক মানি’ ও ‘অশান্ত মেয়ে’ নামে আরও দুটি ছবির ক্ষেত্রেও পুলিশি দৃশ্য কর্তন করা হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশের নির্দেশনা জারির পর থেকে সেন্সর বোর্ডের এমন কঠোর নজরদারির জন্য নির্মাতারা পড়েছেন বেশ বিপাকে। রীতিমতো পুলিশি আতংকে রয়েছেন বলেই জানিয়েছেন অনেকে।

তবে কেউ কেউ বিষয়টিকে ইতিবাচক দৃষ্টিতেও দেখছেন। তারা বলেছেন, বাস্তবে পুলিশের আচরণ যাই হোক না কেন তাদের মধ্যেও ভালো কেউ রয়েছেন। যাদের ভালোভাবে উপস্থাপন করলে সাধারণ মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে যেতে পারে। পাশাপাশি দুর্নীতিগ্রস্ত পুলিশ সদস্যরাও এটা থেকে শিক্ষা নিতে পারে। সাধারণ মানুষের কাছে পুলিশের দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর জন্য এরই মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে।

ছবি নির্মাণ করে তারা পুলিশের ভূমিকা জনগণের সামনে উপস্থাপন করার জন্য ‘ঢাকা অ্যাটাক’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে ছবিটির শুটিংও শুরু হয়েছে। আরেফিন শুভ ও মাহিয়া মাহিকে নিয়ে ছোট পর্দার নির্মাতা দীপঙ্কর দীপন ছবিটি পরিচালনা করছেন। যদিও এতে পুলিশের কতটা ভাবমূর্তি উদ্ধার হবে তা নিয়েও সন্দিহান অনেকে। এর মধ্যেও অনেকে আশার আলোর আলো দেখছেন। তবে নির্মাতারা একটি সঠিক দিকনির্দেশনা চাইছেন, যাতে কোনো রকম কাটছাঁট ছাড়াই একটি সুন্দর গল্প দর্শকদের উপহার দিতে পারেন তারা।