এবার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ইয়াবায় ফাঁসানোর চেষ্টা

প্রকাশ: ২০১৬-০২-০১ ১২:৪৫:২৩


Policeমাঠপর্যায়ে আবারও এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। লিখিতভাবে কঠোর নির্দেশনার পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুলিশ সদস্যদের বারবার সতর্ক করলেও একের পর এক ঘটনা ঘটেই চলছে। এতে এ বাহিনীর ভাবমূর্তি নিয়েও কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন। এ অবস্থার মধ্যেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে আদাবর থানার এক এসআইয়ের বিরুদ্ধে।

রোববার বিকালে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদের সামনে ওই ছাত্রীকে হেনস্তা করা হয়। শুধু তাই নয়, তাকে রিকশা থেকে জোর করে নামিয়ে নেয়া হয় একটি দোকানের ভেতরে। তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা করা হয়। পরে ওই ছাত্রী থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। সম্প্রতি একই এলাকায় ব্যাংক কর্মকর্তা গোলাম রাব্বিকে মাদক ব্যবসায়ী সাজানোর অপচেষ্টা করে নির্যাতন করেছিলেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ। পরে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।

ভুক্তভোগী রাজধানীর শ্যামলীর আশা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী ফারহানা আক্তার জানান, এ ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করবেন। এদিকে, ঘটনাটি যাতে তেজগাঁও জোনের ডিসির কানে না পৌঁছায় সেজন্য থানার ওসিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু রাত ১১টা ৩ মিনিটে ডিসি ঘটনা শোনার ১ মিনিট পরই এসআই রতনকে প্রত্যাহার করেন। এ বিষয়ে তেজগাঁও জোনের ডিসি বিপ্লব সরকার বলেন, ব্যক্তির দায় বাহিনী নেবে না।

অপরাধ করলে তার রেহাই নেই। তিনি বলেন, ‘ঘটনা শুনে ১ মিনিটের মধ্যে তাকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। প্রয়োজনে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ ওই ছাত্রীর অভিযোগ, বিকালে তিনি ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে বই কিনতে শিয়া মসজিদের দিকে রিকশায় যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে মসজিদের বিপরীতে আদাবর থানার এসআই রতন কুমারসহ পুলিশের তিন সদস্য তাকে বহনকারী রিকশাটি থামান। কোনো কিছু বলার আগেই তার কাছে ইয়াবা আছে কিনা জানতে চান এসআই। এতে তিনি চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, একপর্যায়ে শিয়া মসজিদের বিপরীতে একটি ইলেকট্রিকের দোকানে পুলিশ সদস্যরা জোর করে তাকে নিয়ে যান। সেখানে নেয়ার পর এসআই রতন তাকে অনৈতিক প্রস্তাবও দেন। ফারহানার অভিযোগ, তিনি ওই এসআইকে ভার্সিটিতে পড়ালেখার পরিচয়পত্র দেখান। তারপরও তাকে ইয়াবা ব্যবসায়ী বানানোর অপচেষ্টা করা হয়। একপর্যায় তিনি এসআইকে বলেন, তার ব্যাগ তল্লাশি করতে হবে স্থানীয় লোকদের সামনে। তা না হলে থানায় নিয়ে যান। কিন্তু এতে রাজি হননি রতন। তখন এসআই রতন ছাত্রীকে হুমকি দেন, আমার কাছে ওসি-ডিসি কিছুই না, কারও কাছে নালিশ করেও কোনো লাভ নেই।

ফারহানার স্বামী সজিব আহমেদ রাতে বলেন, স্থানীয় লোকদের সহায়তায় ফারহানা ছাড়া পেলে এসআই রতন একজনকে দিয়ে আবার তার স্ত্রীকে ফোন করান। তখন ওপাশ থেকে লোকটি বলেন, আপনাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এরপর আপনাকে যেখানে স্যার আসতে বলে সেখানে যাবেন। এছাড়াও কিছু আপত্তিকর কথাবার্তা বলেন। সজিব আরও অভিযোগ করেন, এসআই রতন ফারহানাকে বলেছেন, কোথাও অভিযোগ করে লাভ হবে না। মিডিয়ার কাছে গিয়ে কি করবেন। ব্যাংক কর্মকর্তা রাব্বির কথা এ সময় মনে করিয়ে দেন তিনি।

এদিকে এসআই রতন কুমার কাছে দাবি করেন, ফারহানাকে রিকশা থেকে নামিয়ে তল্লাশি করা হয়নি। তাকে তিনি আগে থেকে চেনেন। তিনি আদাবরের যুবদল নেতা সজিব আহমেদ রানার স্ত্রী। তার স্বামীর বিরুদ্ধে নাশকতার অভিযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, ফারহানাকে রিকশায় দেখে বলি আপনার স্বামী ভুল ঠিকানা দিয়েছেন। তিনি এখন কোথায় থাকেন। তার সঠিক ঠিকানাটা চেয়েছি মাত্র। আর অন্য কোথাও তাকে ডাকার বিষয়টিও সঠিক নয় বলেও তিনি দাবি করেন।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস