কদর বেড়েছে আকর্ষণীয় ডিজাইনের প্লাস্টিকের ‍মাদুরের

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২১-১১-০২ ১৮:২৮:০২


আগেকার দিনে ঘাস (পাতি) দিয়ে তৈরি মাদুরের ব্যাপক কদর ‍ছিল। পাতির তৈরি মাদুরের টেকশই এবং দামও বেশি। গত পাঁচ বছর থেকে নওগাঁয় পাতির মাদুরের চাহিদা কমতে থাকায় প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে তৈরি মাদুর জায়গা করে নিয়েছে। গ্রাম-গঞ্জে, শহর-বন্দরে এ মাদুরের কদর বেড়েছে।

এখনকার দিনে মাদুরকে বাহারি রঙে, ডিজাইনে, ফুলের আদলে আরও আকর্ষণীয় করা হচ্ছে। প্লাস্টিকের মাদুর মেশিনের সাহায্যে নিখোঁতভাবে তৈরি করা হয়। ছড়িয়ে পড়ছে সমগ্র দেশে। এজন্য সম্ভাবনাময় হয়ে ওঠেছে প্লাস্টিকের মাদুর। তবে এ খাতে সরকারের সহযোগিতা পেলে আরও একধাপ এগিয়ে যাবে বলে মনে করছে কারখানার মালিক।

জানা গেছে, নওগাঁ সদর উপজেলার মাদারমোল্লা, শিমুলিয়া, ইলশাবাড়ি, খিদিরপর, চক, বলিরঘাট, শৈলগাছী, ত্রিমোহনী, চুন্ডিপুর, চুনিয়াগাড়ী, গাংজোয়ার, জেলার রানীনগর উপজেলার ছয়বাড়িয়া, কুবিড়াতলি, করচগ্রাম, কাশিমপুর, বোদলা, বাহাদুরপুর, হরিশপুর, চকমুনু, মিরাট, আতাইকুলা, হামিদপুর, কুজাইল এবং আত্রাই উপজেলার ভবানিপুর, তিলাবাদুড়ী, জামগ্রাম, নলদিঘীসহ প্রায় ৫০ গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার স্বল্প আয়ের দরিদ্র পরিবারের লোকজন পাতির মাদুর তৈরি করতেন। এ কাজের সঙ্গে অধিকাংশই নারীরা জড়িত।

পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নে ঐতিহ্যবাহী হেলালিয়া হাট মাদুরের হাট নামে পরিচিত পেয়েছে। সপ্তাহের দু’দিন (বৃহস্পতি ও রবি) হাটবার। ওইসব গ্রাম থেকে হেলালিয়া হাটে মাদুর বিক্রি করতে আসেন। বর্তমানে প্রতি হাটে প্রায় ১০ লাখ টাকার পাতি থেকে মাদুর বেচাকেনা হয়। প্লাস্টিকের মাদুর বিক্রির জন্য হাটের দিনের অপেক্ষা করতে হয় না।

প্লাস্টিকের মাদুর প্রতি দিন সর্বনিন্ম ১৫ লাখ টাকা বেচাকেনা হয় বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে পাতি থেকে তৈরি মাদুর কষ্টসাধ্য ও উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কারিগররা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। পাতি দিয়ে তৈরির কারিগর খুঁজে পাওয়া দায়। তারা এখন পেশা পরিবর্তন করেছেন।

পাতির মাদুরের স্থানে প্লাস্টিকের মাদুর জায়গা করে নিচ্ছে। এ মাদুর নরম। ব্যবহারেও আরামদায়ক। সদর উপজেলা চন্ডিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় প্লাস্টিকের মাদুরের ১৭টি কারখানা গড়ে ওঠেছে। কারখানায় বর্জ ও বিভিন্ন প্লাস্টিক থেকে প্লাস্টিকের পাইপ তৈরি করে।

পাইপ দিয়ে তৈরি হয় হরেক রকমের প্লাস্টিকের মাদুর। আর এসব কারখানায় প্রায় তিন শতাধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। আর প্রতিদিন প্রায় ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকার প্লাস্টিকের মাদুর উৎপাদন হয়। এসব প্লাস্টিকের মাদুর চলে যায় ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, লালমনিরহাট ও যশোরসহ বিভিন্ন জেলায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্লাস্টিকের মাদুর পাইকারি ৬ বাই ৭ ফুট মোটা ৩৩০ টাকা ও পাতলা ২০০ টাকা, ৫ বাই ৭ ফুট মোটা ২৩০ টাকা ও পাতলা ১৩৫ টাকা, ৪ বাই ৬ ফুট মোটা ১৪৫ টাকা ও পাতলা ১০৫ টাকা, ৩ বাই ৬ ফুট মোটা ১৩০ টাকা ও পাতলা ৭৫ টাকা এবং জায়নামাজ মোটা ৭৫ টাকা ও পাতলা ৪৫ টাকা। প্রতিদিন প্রায় ১৫ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকার প্লাস্টিকের মাদুর উৎপাদন হয়। পাইকারি দরে কিনে খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রকারভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা লাভে বিক্রি করে থাকেন।

সানবিডি/এনজে