অমর একুশে বই মেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আপডেট: ২০১৬-০২-০২ ১০:৫৩:১৯


news_imgবাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত অমর একুশে বই মেলা-২০১৬ এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এই মেলার উদ্বোধন শেষে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন তিনি।

এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একুশে ফ্রেবুয়ারি আমাদের প্রেরণার উৎস। একুশ আমাদের প্রতিবাদের ভাষা শেখায় ও দাবি আদায়ের শক্তি যোগায়। এ মেলাকে কেন্দ্র করে দেশের নানা প্রান্তের মানুষ এবং প্রবাসী বাঙালিদের বিপুল সমাগম ঘটে। এই মেলা এখন পরিণত হয়েছে বৃহত্তর বাঙালির মিলন মেলায়।

তিনি বলেন, কানাডা প্রবাসী দুজন বাঙালির প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আমাদের প্রস্তাব পাস হয়। ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এর মাধ্যমে আমাদের ত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলা একাডেমি আমাদের ভাষাকে উন্নত করতে অনেক সুযোগ করে দিচ্ছে। অমর একুশে গ্রন্থ মেলা তার যাত্রা শুরু তিন দশক পেরিয়ে পৃথিবী ব্যাপী স্বীকৃতি পেয়েছে। সম্প্রতি বাংলা একাডেমি দৃষ্টি প্রতিবন্দী ভাই-বোনদের জন্য একটি ব্রেইল প্রকাশনা করেছে। এই উদ্যোগ দৃষ্টি প্রতিবন্দীদের মনে আলো যোগাবে। খুব শিগগির ‘বিষাদ সিন্ধু’র ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার সরকার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু ২০০১ সালে আমরা সরকার গঠন করতে না পারায় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমায় এসে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা আবার সেই কাজ শুরু করি। এই ইনস্টিটিউট এখন ইউনেস্কোর ক্যাটাগড়ি-২ মর্যাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।

অমর একুশে বই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫ এর জন্য ১০টি ক্যাটাগরিতে মনোনীত ১১ জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলেন— কবিতায় আলতাফ হোসেন; কথাসাহিত্যে শাহীন আখতার; প্রবন্ধে যৌথভাবে আবুল মোমেন ও ড. আতিউর রহমান; গবেষণায় মনিরুজ্জামান; অনুবাদে আবদুস সেলিম; মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক সাহিত্যে তাজুল মোহম্মদ; আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা ও ভ্রমণকাহিনী ক্যাটাগরিতে ফারুক চৌধুরী; নাটকে মাসুম রেজা; বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও পরিবেশে শরীফ খান এবং শিশুসাহিত্যে সুজন বড়ুয়া।

এবার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৮২টি ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ৩২০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টল দেওয়া হয়েছে। এছড়া বাংলা একাডেমিসহ ১৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের ১৫টি প্যাভিলিয়ন এবং ৯২টি লিটল ম্যাগাজিন রয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৪৫০টি প্রকাশনা সংস্থা এবারের মেলায় অংশ নিয়েছে। গত বছর অংশ নিয়েছিল ৩৫১টি প্রকাশনা সংস্থা।

একাডেমির নজরুল মঞ্চে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা হয়েছে। মেলার দুই অংশেই ওয়াই-ফাই সুবিধা থাকবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। মেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই ৩০ শতাংশ কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫ শতাংশ কমিশনে বই বিক্রি করার নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ফেব্রুয়ারির ২৯ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বইপ্রেমীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।

সানবিডি/ঢাকা/আহো