নতুন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করুন
:: আপডেট: ২০২১-১১-০৮ ২২:১৭:০০
বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য রয়েছে নানা ধরনের ছাড়। যে কোন সময় মুনাফা তুলে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। বৈশ্বিক করোনার মহামারির মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি গতিশীল রয়েছে। আমদানি-রপ্তানি সচল রয়েছে। এক যুগ ধরে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। ফলে নতুন বাংলাদেশে বিনিয়োগে মুনাফার সম্ভবনা বেশি।
সোমবার (৮ নভেম্বর) যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার সেন্টার কনভেনশন কমপ্লেক্সের এক্সচেঞ্জ হলে ‘ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট পোটেনশিয়াল ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এসব কথা বলেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, ম্যানচেস্টার সিটির মেয়র এন্ডো বার্নহাম, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান (বিডা) মো. সিরাজুল ইসলাম, বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোহাম্মদ রহমাতুল মুনিম, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান প্রমুখ।
সম্মেলনে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
সালমান এফ রহমান বলেন, এক দশকে বাংলাদেশ আমুল পরিবর্তিন হয়েছে। দেশের অর্থনীতি ও মাথাপিছু আয় এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধিসহ প্রত্যেকটি সেক্টরে ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা ছিল না সবার কাছে বাংলাদেশের নামটাও পরিচিত ছিল না। সবাই বাংলাদেশকে দরিদ্র রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হতো। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে নিয়ে ব্রান্ডিং ছিল না। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশকে উপস্থাপিত হয়েছে।
তিনি বলেন, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড পিএলসি গ্রুপের চেয়ারম্যান জোসে ভিয়ালস বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রশংসা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের মন্ত্রী লেরি সামার্স বাংলাদেশের অভুতপূর্ব প্রশংসা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশকে পরিবর্তন করেছে। এই ক্ষেত্রে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নতুন বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে। ৫০০ ইউএস ডলার থেকে মাথা পিছু আয় ২৫০০ ডলার ছাড়িয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশে রুপান্তরের কাজ চলছে। করোনার আগে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলছিল। কিন্তু করোনায় অর্থনীতি আঘাত এনেছে। তবে প্রধামন্ত্রীর সময় উপযোগী পদক্ষেপের কারণে অর্থনীতি স্বচল রয়েছে। দেশের আমদানি-রপ্তানি, রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
তিনি বলেন, দেশে বিশ্বমানের অবকাঠামো তৈরি হচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের জন্য নানা ধরনের কর অবকাশ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ১০০টির বিশেষ অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিনিয়োগের এটি সর্বোৎকৃষ্ট সময়। স্বাধীনতার সময় থেকে বৃটেনের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। স্বাধনীতার সময় আমাদের সহায়তা করেছে। বৃটেনের বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশের বিনিয়োগে নানা সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
ম্যানচেস্টার সিটির মেয়র এন্ডো বার্নহাম বলনে, বাংলাদেশ আমাদের ভালো বন্ধু। সিলেট বিনিয়োগের কথা চিন্তা করছি। আমরা বাংলাদেশের বিনিয়োগ শুরু করবো। বাংলাদেশের অনেক ব্যবসায়ী এখানে ব্যবসা করেন। তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে।
এনবিআর চেয়ারম্যান বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নানান সুবিধা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ১৮ খাতে কর অবকাশ রয়েছে। শিল্প ও প্রতিষ্ঠান স্থাপনে কর সুবিধা রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য এখন উপযুক্ত সময়। যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনুরোধ করেন।
বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন,গত এক দশকে দেশের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এমনকি করোনার সময়ও আমাদের গ্রোথ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি হয়েছে। দেশের পদ্মা সেতু, মেট্রারেলসহ বড় বড় সব প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। একই সঙ্গে মেধাবীরা নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে স্টার্ট আপস কোম্পানি পরিচালনা করছে। ফলে পুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির বড় অবদান রাখবে। দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভবনা তৈরি হয়েছে। এই মুহুর্তে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন পাবেন। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করুন।
শিবলী রুবাইয়াত বলেন, ‘গত ৩০ বছরের মধ্যে সামগ্রিকভাবে বর্তমানে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে ভালো অবস্থানে রয়েছে। এতে সূচক প্রায় ৭ হাজারে রয়েছে এবং বাজার মূলধনও বেড়েছে। আমরা এখন শুধুমাত্র ইক্যুইটি মার্কেটে নয়, এর সঙ্গে বন্ড মার্কেটেও জোরদার করছি। নতুন কিছু বন্ড, দীর্ঘ মেয়াদি বন্ড, পারপেচুয়াল বন্ড এবং সুকুক বন্ড নিয়ে আসছি। এক্সচেঞ্জে সরকারি ট্রেজারি বন্ডের লেনদেন শুরু করতে যাচ্ছি। সিটি ব্যাংক হবে বাজারে পারপেচুয়াল বন্ড লেনদেন করা প্রথম ব্যাংক। এগুলোতে বিনিয়োগ করলে অনেক বেশি রিটার্ন পাবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এশিয়ান ফ্রন্টিয়ার ক্যাপিটাল তাদের মাসিক তথ্যের মাধ্যমে বলেছে, বাংলাদেশের শেয়ারবাজার ২০২০ সালে সর্বোচ্চ রিটার্ন দিয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ওপর রিটার্ন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ক্যাপিটাল মার্কেট এখন প্রকৃত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরার জন্য প্রস্তুত, সেই সঙ্গে শেয়ারবাজারের ওপর বিশাল আস্থা রয়েছে।’
এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ অনুকুলে ও ব্যবসাবান্ধব সরকার রয়েছে বলে জানান তিনি। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যবাসীকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি। এতে উভয় পক্ষ লাভবান হবেন বলে উল্লেখ্য করেন।
এছাড়াও বক্তারা জানান, বাংলাদেশ এখন বিনিয়োগের উত্তম জায়গা। বিশেষ করে জ্বালানি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল, লাইন ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যাগ্রো প্রসেসিং, ব্লু-ইকোনোমি, ট্যুরিজম, হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, তথ্য-প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় সেক্টরে সুবিধা নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগের জন্য অপেক্ষা করছে বাংলাদেশ। ব্রিটিশ উদ্যোক্তারা বিনিয়োগের জন্য এসব সেক্টর বা এর বাইরে যে কোনো সেক্টর বেছে নিতে পারেন।
এএ