বিএসইসি’র যে সিদ্ধান্তে চাঙা পুঁজিবাজার
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১১-১৯ ২০:৪৩:০৫
শেয়ারের বিপরীতে ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) নতুন বিধান করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরপর থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পুঁজিবাজার। শুধু তাই নয়, বিএসইসি’র এই সিদ্ধান্তের জেরে ব্যাংক খাতের উত্থান হয়েছে, পাশাপাশি গত সপ্তাহে মূলধন ফিরেছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা।
বিএসইসি’র নতুন বিধান অনুযায়ী, যেসব শেয়ারের মূল্য আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৪০-এর কম, সেসব শেয়ারে এখন থেকে ১০০ টাকার বিপরীতে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা (১: ০.৮) ঋণ সুবিধা পাবেন বিনিয়োগকারীরা। আগে সর্বোচ্চ ঋণ সুবিধার এ বিষয়টি সূচকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল। ঢাকার বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সর্বোচ্চ ৮ হাজারে না পৌঁছানো পর্যন্ত সর্বোচ্চ হারে ঋণ সুবিধা দেওয়ার বিধান ছিল আগে। পাশাপাশি যেসব শেয়ারের পিই রেশিও ৪০ বা তার বেশি, সেসব শেয়ার ঋণের অযোগ্য বিবেচিত হতো। এখন ঋণের বিষয়টি সূচকের সঙ্গে সম্পৃক্ত না রেখে শুধুমাত্র পিই রেশিও’র সঙ্গে সম্পৃক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে ব্যাংক খাতের শেয়ারের প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়ে যায়। বর্তমানে সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতের পিই রেশিও ১০–এর নিচে রয়েছে।
বাজারের তথ্য বলছে, কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার মধ্য দিয়ে গেলো সপ্তাহ পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। এতে প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা বেড়েছে। এর ফলে টানা দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়লো সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে। মূলধন বাড়ার পাশপাশি বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
গেলো সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৬১ হাজার ৭৮ কোটি টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল পাঁচ লাখ ৫৬ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। অর্থাৎ গেলো সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে চার হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বাড়ে চার হাজার ৯১২ কোটি টাকা। এ হিসাবে টানা দুই সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বাড়লো ৯ হাজার ৫২০ কোটি টাকা।
অবশ্য তার আগে টানা চার সপ্তাহের পতনে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছিল ৩০ হাজার কোটি টাকা। এই হিসাবে ৩০ হাজার কোটি টাকা মূলধন হারানোর পর ডিএসই সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা মূলধন ফিরে পেয়েছে।
এদিকে বাজারের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে, বাজার মূলধন বাড়ালেও গেলো সপ্তাহে ডিএসইতে যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার থেকে বেশি। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৯১টির। ১৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এরপরও গত সপ্তাহে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৯৫ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ৮৯ দশমিক ২১ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি গেরো সপ্তাহে বেড়েছে ইসলামি শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচকও। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে দুই দশমিক ৭৫ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছিল ১৫ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট। বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচকও টানা দুই সপ্তাহ বেড়েছে। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৭৬ দশমিক ৬৮ পয়েন্ট।
বাজারের তথ্য বলছে, গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৩৯৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ১৭৯ কোটি ৬৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২১৮ কোটি ৮৩ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
এছাড়া গত সপ্তাহ জুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ছয় হাজার ৯৯২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল পাঁচ হাজার ৮৯৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। এই হিসাবে মোট লেনদেন কমেছে এক হাজার ৯৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা বা ১৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন
Sunbd News–ক্যাপিটাল নিউজ–ক্যাপিটাল ভিউজ–স্টক নিউজ–শেয়ারবাজারের খবরা-খবর
এএ