জাবি ছাত্রকে পেটালো ছাত্রলীগকর্মীরা
প্রকাশ: ২০১৬-০২-০৫ ২১:২৫:৪৪
তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রকে পিটিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের কর্মীরা। বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার আহত মো. ইউসুফ জামিল প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মারধরকারী ছাত্রলীগকর্মীরা হলেন, ৪১তম ব্যাচের জুবায়ের আহম্মেদ (প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ), তারেক হাসান (পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ), ৪২তম ব্যাচের সাইফুল ইসলাম (ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগ), মাহবুবুর রহমান নীল (দর্শন বিভাগ), জাকির হোসেন (পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগ), ইমরান হোসেন (উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ), ৪৩তম ব্যাচের আসিফ উল ইসলাম (প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ)। এরা সবাই মওলানা ভাসানী হলের আবাসিক ছাত্র এবং শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান আকন্দের অনুসারী।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জামিল রাতের খাবার খাওয়ার জন্য বটতলার নুরু মিয়ার দোকানে যান। সেখানে অনেকক্ষণ বসে থাকার পরেও খাবার দিতে দেরী হওয়ায় জামিল নুরু মিয়ার কাছে এর কারণ জানতে চান। এসময় মওলানা ভাসানী হলের ছাত্রলীগকর্মী জুবায়ের আহম্মেদ জামিলের পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। পরে জামিলও তার পরিচয় জানতে চাইলে জুবায়ের তাকে ধাক্কা দিয়ে ধাওয়া করলে জামিল সেখান থেকে দৌড়ে আত্মরক্ষা করে।
কিছুক্ষণ পরে জামিল তার হলের এক বন্ধুকে সঙ্গে করে পুনরায় নুরু মিয়ার দোকানের সামনে এসে তাকে ধাওয়াকারী ছাত্রলীগকর্মীদের উদ্দেশ্য করে গালি দিয়ে তাদের সামনে আসতে বলে। এসময় আকস্মিকভাবেই শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমানের সামনেই জামিলকে দফায় দফায় মাথায় আঘাত করতে থাকে।
এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সিনিয়র শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও দোকানকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হলে পাঠিয়ে দেয়। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। অন্যদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও নির্লিপ্ত অবস্থায় মোটর সাইকেলের ওপর বসে থাকেন ছাত্রলীগ নেতা মোর্শেদ। অতীতেও মোর্শেদের অনুসারীদের বিরুদ্ধে হল ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষ গ্রুপের নেতাকর্মীদের মারধর এবং যৌন নিপীড়নের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া ছাত্রলীগ নেতা মোর্শেদ ২০১৩ সালে ১৮ মার্চ মওলানা ভাসানী হল থেকে বিদেশী পিস্তলসহ পুলিশের হাতে আটক হলে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন তাকে শিবির হিসেবে চিহ্নিত করেন।
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোর্শেদুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘আমরা কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেই না। অভিযুক্তরা দোষী প্রমাণিত হলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাংগঠনিকভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’
আর অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী জুবায়ের আহম্মেদ বলেন, ‘আমি মারধর করি নি। তবে হলের জুনিয়ররা কয়েকটা চড়-থাপ্পড় দিয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সানবিডি/ঢাকা/রাআ