এমইএস প্রকৌশলীদের ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শন
‘অর্থনৈতিক উন্নয়নে দেশীয় পণ্যে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত’
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২১-১২-০৮ ১৯:২৫:২৯
মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস (এমইএস)-এর ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ মেজর জেনারেল ইবনে ফজল সায়েখুজ্জামান বলেছেন, বাংলাদেশ আর্মি এবং ওয়ালটনের মধ্যে একটি বিশেষ মিল রয়েছে। আমরা দেশের সুরক্ষায় নিয়োজিত আছি। ওয়ালটন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নিয়োজিত আছে। তাদের দক্ষতা আছে। আমদানি বিকল্প পণ্য উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের টাকা দেশেই রাখছে। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তাদের অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সব পর্যায়ে সেটা নিশ্চিত করা দরকার।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনকালে ইবনে ফজল সায়েখুজ্জামান এসব কথা বলেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭৬ জন প্রকৌশলী ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য জায়ান্ট ওয়ালটনের কারখানা পরিদর্শন করেন। উদ্দেশ্য ছিলো বাংলাদেশে তৈরি আন্তর্জাতিকমানের পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া এবং স্থানীয় পর্যায়ে এ শিল্পের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ।
এমইএস প্রতিনিধিদলের কারখানা পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম।
সকালে কারখানা কমপ্লেক্সে পৌঁছালে অতিথিদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। সে সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আলমগীর আলম সরকার, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক কর্নেল (অবঃ) শাহাদাত আলম, মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, তানভীর রহমান, ইউসুফ আলী, সোহেল রানা ও ইয়াসির আল ইমরান, নির্বাহী পরিচালক রাকিব উদ্দীন, তানভীর আঞ্জুম, মহসিন আলী মোল্লা, মিডিয়া উপদেষ্টা এনায়েত ফেরদৌস প্রমুখ।
পরিদর্শন শেষে মেজর জেনারেল ইবনে ফজল সায়েখুজ্জামান বলেন, ওয়ালটনে এসে অত্যন্ত চমৎকৃত হয়েছি। তাদের একটি ভিশন আছে। মানবিক মূল্যবোধ ও দূরদর্শীতা রয়েছে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি অনেক উন্নত। আমার মনে হচ্ছে তিন বছর আগেই যদি ওয়ালটন কারখানায় আসতে পারতাম, তবে অনেক ভালো হতো। এমইএসে নতুন যে প্রকৌশলীরা যোগ দেবেন, চেষ্টা করবো তাদের ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনে পাঠাতে।
ওয়ালটনের রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (গবেষণা ও উদ্ভাবন) কার্যক্রমের প্রশংসা করে তিনি আরো বলেন, আপনারা দেশের সুসন্তান। দেশকে গড়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে কাজ করছেন। ওয়ালটন কারখানা একটি কমপ্লিট প্যাকেজ। ওয়ালটনের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি অত্যন্ত যৌক্তিক। এর কারণ তাদের উন্নত গবেষণা কার্যক্রম। যা সবার অনুসরণ করা উচিত।
এস এম মাহবুবুল আলম বলেন, উচ্চমানের পণ্য উৎপাদনের কারণে দেশ-বিদেশের ক্রেতাদের কাছে আস্থার নাম ওয়ালটন। সম্প্রতি আমরা তুরস্কের সোডেক্স আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় অংশ নিয়েছি। সেখানে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন পণ্যের প্রতি বৈশ্বিক ক্রেতাদের কাছ থেকে বিপুল সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে ওয়ালটনের অফলাইন ভয়েজ কমান্ড বা কথা বলা এয়ার কন্ডিশনারের মতো যুগান্তকারী উদ্ভাবন তাদের বিস্মিত করেছে।
সরকারি ও প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতাদের ওয়ালটন কারখানা পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, চাহিদা অনুযায়ী কাস্টোমাইজ পণ্য তৈরি করে দেয়ার সক্ষমতা ওয়ালটনের আছে। তৈরি পোশাকখাতের মতো ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য শিল্পেও বিশ্ববাজারে অন্যতম শীর্ষস্থানে যাওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে।
এস এম মাহবুবল আলম আরো বলেন, সরকারি ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে দেশীয় পণ্য অগ্রাধিকার পেলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। কর্মসংস্থান বাড়বে। বৈশ্বিক বাজার ধরা সহজ হবে। আমরা চাচ্ছি বাংলাদেশের কাউকে যেন বিদেশে শ্রমিক হিসেবে যেতে না হয়। বরং তার থেকেও উন্নত কর্মক্ষেত্র যেন দেশেই তৈরি হয়। বিদেশিদের যেন বাংলাদেশে কাজ করতে আসতে হয়। সেভাবেই আমরা দেশকে গড়ে তুলবো। যখন আমরা দেশের পণ্য ভালোবাসবো, নিজেরা ব্যবহার করবো, তখনই সেটা সহজ হবে।
কারখানা প্রাঙ্গনে পৌঁছে অতিথিরা প্রথমে ওয়ালটনের সুসজ্জিত প্রোডাক্ট ডিসপ্লে সেন্টার ঘুরে দেখেন। পরে তারা ওয়ালটনের রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ভিআরএফ, লিফট ও এলিভেটর ইত্যাদি পণ্যের উৎপাদন প্রক্রিয়া সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন।
এএ