শনাক্ত করা যায়নি নিহত ৫ জনের পরিচয়, হবে ডিএনএ পরীক্ষা

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-১২-১৫ ১১:৫৫:১৬


বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নওগাঁ-তিলোকপুর সড়কের পার্বতীপুরে প্লাস্টিকের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহত পাঁচ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহতদের নাম-পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি প্রশাসন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিখোঁজ চারজনের পরিচয় জানা গেছে।

এরা হলেন- পালোয়ানপাড়ার বাসানের ছেলে রিমন (১৫), ছাতনি গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে বেলাল হোসেন (৫৫), সান্দিরা গ্রামের নাসির উদ্দিনের ছেলে শাহজাহান (২৯) ও কমলদুগাছী গ্রামের লুৎফর রহমান সিহাব হোসেন (১২)। নিখোঁজদের স্বজনরা কারখানার পাশে অপেক্ষা করছেন। প্লাস্টিক কারখানাটির মালিক সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্ট।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্লাস্টিক কারখানায় ওয়ানটাইম প্লেট তৈরি করা হতো। কারখানার বয়স তিন বছর হলেও চালু করা হয়েছে এক বছর আগে। দুই শিফটে ৭০ জন শ্রমিক সেখানে কাজ করেন। দিনে ৩৫ জন ও রাতে ৩৫ জন। প্রতিদিনের মতো সকাল থেকে শ্রমিকরা সেখানে কাজ করছিলেন। দুপুর ১২টার দিকে হঠাৎ কারখানার ভেতরের পশ্চিম দিকে প্লাস্টিকের কাঁচামাল রাখার জায়গায় আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শ্রমিকরা ভয়ে বেরিয়ে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হলে নওগাঁ, আত্রাই, রানীনগর, আদমদীঘি ও দুপচাঁচিয়া থানার ১২টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিদের সদস্যরা।

কারখানাটির মালিক সান্তাহার পৌরসভার মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্ট বলেন, আগুন লাগার পরই ১৫-২০ জন শ্রমিক বেরিয়ে আসে। পাঁচজন মারা গেছে। নিখোঁজদের বিষয়ে জানা সম্ভব হয়নি। আগুনে কারখানার কাঁচামাল ভস্মীভূত হয়েছে। এতে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছি।

এদিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক, পুলিশ সুপার সুদীপ চক্রবর্তীসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক একেএম মুরশেদ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের নওগাঁ ইউনিটসহ ১২টি ইউনিট বিকেল ৩টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কীভাবে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা বলা সম্ভব না। এছাড়াও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। পাঁচজন শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মরদেহ বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।

আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রাবণী রায় বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। জেলা প্রশাসক মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।

বগুড়ার জেলা প্রশাসক জিয়াউল হক বলেন, ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে। তবে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। ঘটনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কলকারখানা পরিদর্শকসহ কয়েকজনকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সানবিডি/ এন/আই