আড়াই হাজার বছর আগের গ্রিক ভাস্কর্যে ল্যাপটপের খোঁজ

আপডেট: ২০১৬-০২-০৮ ১৪:১৭:১২


1454869596-laptop-02প্রায় আড়াই হাজার বছর আগেও ছিল ল্যাপটপ। তাই আবার অত্যাধুনিক ইউএসবি পোর্টওয়ালা! খবরটি শুনেই হয়তো গাঁজাখুরি বলে উড়িয়ে দেবেন। যাঁরা জানেন তাঁরা হয়তো বলেই বসবেন, আরে মূর্খ, ১৯৮১ সালে অ্যাডাম অবসবোর্ন বিশ্বের প্রথম ল্যাপটপটি আবিষ্কার করেন। এরপর ১৯৮৮ সাল থেকে তাঁর প্রতিষ্ঠান অবসবোর্ন কম্পিউটার্স প্রথম ল্যাপটপ তৈরি করে বাজারজাত করেন।

কিন্তু এই সব জেনেও এই আড়াই হাজার বছর আগের একটি ভাস্কর্যে খোদাই করা ল্যাপটপের প্রতিকৃতিকে ঘিরে পাশ্চাত্যে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার জে পল গেট্টি জাদুঘরে গ্রিসের বিখ্যাত ডেলফি সমাধিস্থলের স্তম্ভে স্থাপিত কিছু ভাস্কর্যের প্রদর্শনী হচ্ছিল। আর সেখানে একটি ভাস্কর্যে দেখা গেছে একটি প্রায় আধুনিক ল্যাপটপের প্রতিকৃতি। তাও আবার ইউএসবি পোর্টসহ!

ভাস্কর্যটির ছবি প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, পাথর খোদাই করে তৈরি ডেলফির ভাস্কর্যে দেখা যাচ্ছে, সিংহাসনে বসা এক নারী এক মেয়েশিশুর হাতে একটি ‘ল্যাপটপ’ তুলে দিচ্ছেন। আর ওই নারীর চোখ আটকে আছে ল্যাপটপের পর্দায়। ল্যাপটপে ক্যাবল লাগানোর মতো পোর্টও রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, খ্রিস্টের জন্মের প্রায় ১০০ বছর আগে গ্রিসের ডেলফি সমাধিস্থলের স্তম্ভে ভাস্কর্যটি স্থাপিত হয়েছিল। ডেলফি সমাধিস্থল সম্পর্কে গ্রিক পুরাণে বলা হয়েছে, দেবতা অ্যাপোলোকে উৎসর্গ করে নির্মাণ করা হয় গ্রিসের পারনাসুস পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত সমাধিস্থলটি।

এদিকে খোদাই করা যন্ত্রটি আধুনিক ল্যাপটপ ছিল কি না, তা নিয়ে গবেষণাও শুরু হয়েছে। এক গবেষক টেলিগ্রাফের কাছে দাবি করেন, এটি লেখার প্রাচীন যন্ত্র ‘ওয়াক্স ট্যাবলেট’। ওয়াক্স ট্যাবলেট যন্ত্রটি ল্যাপটপের মতোই দুই ভাঁজ করা যেত। ওই যন্ত্রের পর্দায় স্টাইলাস বা কলম দিয়ে লেখা হতো।

তবে আরেক গবেষকের দাবি, ভাস্কর্যটিতে চিত্রিত নারীর হাতে কোনো স্টাইলাস বা কলম ছিল না। এ ছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, ভাস্কর্যের চিত্রটি ওয়াক্স ট্যাবলেটের চেয়ে পাতলা। গ্রিক অন্যান্য ভাস্কর্যে যে ওয়াক্স ট্যাবলেট চিত্রিত হয়েছে, তার সঙ্গে ডেলফির ভাস্কর্যের ‘ল্যাপটপের’ কোনো মিল নেই। সবচেয়ে বড় কথা ডেলফির ভাস্কর্যে আধুনিক ল্যাপটপের মতো ইউএসবি পোর্ট রয়েছে। ওয়াক্স ট্যাবলেটে কোনো পোর্ট ছিল না।

আবার কোনো কোনো গবেষক একে পৌরাণিক প্যান্ডোরার বাক্স বা প্রাচীন মেকআপ বক্স হিসেবেও বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এটাও মেলানো যাচ্ছে না। কারণ ওই ‘যন্ত্রাংশটি’ প্যান্ডোরা বক্স বা মেকআপ বক্সের চেয়ে অনেক পাতলা।

এই ঘটনার সমাধান টানতে টেলিগ্রাফের প্রতিবেদক সুইজারল্যান্ডের প্রখ্যাত কল্পবিজ্ঞান গবেষক এরিক ফন দানিকেনের লেখার উদাহরণ টেনেছেন। দানিকেন তাঁর ‘পৌরাণিক সত্যি’ লেখায় বলেছেন, প্রাচীন আমলে ‘সৃষ্টিকর্তার’ পক্ষ থেকে যাজক শ্রেণি আধুনিক সভ্যতার মানুষের ব্যবহৃত যন্ত্রের মতো বিভিন্ন যন্ত্র পেতেন। ধারণা করা হচ্ছে, যাজকরা সৃষ্টিকর্তা বা এলিয়েনের সঙ্গে উচ্চ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগ করতেন।

এদিকে সমাধিস্থলের ভাস্কর্যে ল্যাপটপের চিত্র কেন আঁকা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বলা হচ্ছে, পরকালেও পৃথিবীর মতো সুখী ও সহজ জীবন কল্পনা করে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করা হয়েছে।

সানবিডি/ঢাকা/আহো