রূপপুর প্রকল্পের লোহা পাচারের সময় ছাত্রলীগ নেতাসহ আটক ৫
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-১২-২৮ ১৫:৩১:৩৮
পাবনার ঈশ্বরদীর পাকশীস্থ নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের ভেতর থেকে বাইরে পাচার করার উদ্দেশ্যে বের হওয়ার সময় একটি ট্রাকসহ প্রায় ১০ টন লোহা (রড ও পাইপ) জব্দ করা হয়েছে। এ সময় পাচারের সন্দেহে পাঁচ ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
গতকাল সোমবার ঈশ্বরদীর পাকশীতে রূপপুর প্রকল্পে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যের সহযোগিতায় তাদের আটক করা হয়। মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান আসাদ লোহাসহ একটি ট্রাক জব্দ ও পাঁচজনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আটকরা হলেন পাকশী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও রূপপুর মোড়ের মৃত হাসেম আলীর ছেলে মিরাজ আলী (৩৪), লক্ষ্মীকুণ্ডা গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে রুবেল ইসলাম রাজন (৩৭), ঠাকুরগাঁওয়ের আরাজী মাটিগাড়া গ্রামের মির্জা বেলাল হোসেনের ছেলে মাজহারুল ইসলাম সাদ্দাম (২৮), ঈশ্বরদীর বাঘইল স্কুলপাড়ার নুর মস্তফার ছেলে কামরুল হাসান রাসেল (৩৭) ও নাটোরের বনপাড়ার বাহিমালি গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে আবুল কালাম (৩৮)।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ সকালে তাদের ঈশ্বরদী থানায় নেওয়া হয়েছে। পাচারকারী সন্দেহে তাদের আটক করা হয়েছে।
রূপপুর পুলিশ ফাঁড়ি সূত্রে জানা যায়, রূপপুর প্রকল্পের ভেতর থেকে গেট দিয়ে বাইরে বের হয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ট্রাকসহ প্রায় ১০ টন লোহা জব্দ করে। এ সময় ট্রাকচালকের কাছে প্রয়োজনীয় বৈধ কাগজপত্র দেখতে চায় তারা। তবে বৈধ কাগজপত্র দেখাতে না পারায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ট্রাকচালক আবুল কালাম আজাদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে।
জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জড়িত আরও চারজনের নাম প্রকাশ করেন। অন্যরা সে সময় রূপপুর প্রকল্প এলাকায় ছিলেন। পরে তাদের চারজনকে আটক করে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে রাত আনুমানিক ১০টার দিকে রূপপুর পুলিশ ফাঁড়িতে ট্রাক ও লোহাসহ পাঁচ ব্যক্তিকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পুলিশ আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সন্তোষজনক জবাব ও লোহার বৈধ কাগজপত্র পায়নি। এ অবস্থায় আজ সকালের দিকে পাকশীর রূপপুর ফাঁড়ি থেকে আটকদের ঈশ্বরদী থানা পুলিশ হাজতে নেওয়া হয়।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, শুনেছি অবৈধভাবে কাগজপত্র ছাড়াই ট্রাকে করে তারা লোহাগুলো গোপনে রূপপুর প্রকল্পের বাইরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এরমধ্যে লোহার রড ও কিছু পাইপ রয়েছে। সব মিলিয়ে মালামাল সাড়ে ৯ মেট্রিক টনের কিছুটা বেশি হবে।
ওসি আরও বলেন, রূপপুর প্রকল্প দেশের একটি বৃহৎ উন্নয়নমূলক প্রকল্প। এর সার্বিক নিরাপত্তার জন্য এখানে সার্বক্ষণিক সেনাসদস্য, বিজিবি, পুলিশ, আনসার রয়েছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের ভেতর থেকে অবৈধভাবে লোহা নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সদস্যদের সন্দেহ হয়।
পরে তারা ট্রাকবোঝাই লোহাসহ পাঁচজনকে আটক করে আমাদের হস্তান্তর করেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। আটকরা এখনো কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। কাগজপত্র, ট্রাকের চালানসহ প্রয়োজনীয় অনুমোদন না দিতে পারলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সানবিডি/ এন/আই