পিরোজপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুঁটকি ব্যবসা
জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২১-১২-৩০ ২০:৩০:৪৯
সরবরাহ ভালো এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে চাহিদা থাকায় পিরোজপুরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে শুঁটকির ব্যবসা। সুস্বাদু আহারের তালিকায় যোগ হচ্ছে শুঁটকি মাছের রকমারি ব্যবহার। শুধু দেশে নয়, দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও বাড়ছে শুঁটকির চাহিদা। তাই পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্যবন্দরের কাছে গড়ে উঠা শুটকির ব্যবসার উৎপাদনও বাড়ছে। মাছ ভেদে প্রতি কেজি শুঁটকি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে এক হাজার দুইশ’ টাকায়। সরবরাহ নিশ্চিত করতে পিরোজপুরের পাড়ের হাটের কেমিক্যাল মুক্ত শুটকি পল্লীর শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
পিরোজপুরের পাড়েরহাট বন্দর বঙ্গোপসাগরের খুব কাছাকাছি থাকায় এখানকার বাদুরা নামক স্থানে গড়ে উঠেছে একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। ফলে জেলেরা সাগর থেকে মাছ ধরে সরাসরি নিয়ে আসে পিরোজপুরের একমাত্র এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটিতে। এ বন্দরে শতাধিক প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের আমদানি থাকলেও ফ্যাপস্যা, লইট্যা, ছুড়ি, মর্মা, চিতলসহ প্রায় ৩৫ প্রকারের সামুদ্রিক মাছ শুঁটকি করেন তারা।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রিয়াজ হোসেন জানান, নভেম্বর মাস থেকে শুরু হয়ে প্রায় সাড়ে চার মাস চলে এই শুটকির ব্যবসা। কেমিক্যাল মুক্ত ও পরিচ্ছন্নতার সাথে শুঁটকি তৈরি করায় এ মাছের চাহিদা অনেক।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বাদুরা গ্রামে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে আর আমাদের এখানে কাজ করছে প্রায় ৭০ জন শ্রমিক। তাদের বেতন আট থেকে ১০ হাজার টাকা। আজ থেকে পাঁচ বছর আগে একটি সেড দিয়ে যাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে শুঁটকির সেডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচটি। আর প্রতি বছর এ জেলায় উৎপাদিত হয় প্রায় ৭৫ থেকে ৮০ হাজার কেজি শুঁটকি।
শ্রমিক রাসেল জানান, বছরের তিন মাস তারা শুটকির কাজ করেন আর বাকি সময় গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার কাজ করেন। তাদের এ পল্লীতে প্রায় ৭০-৮০ ধরনের মাছ শুকানো হয়। আর এ শুটকি পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে।
আরেক শ্রমিক অহিদুল জানান, তারা প্রতিদিন ভোর রাতে মৎস্য বন্দর থেকে কাঁচা মাছ কিনে তা প্রক্রিয়াজাত করে রোদে শুকাতে দেন। এভাবে প্রতিদিন চলে কর্মযজ্ঞ। ভোর চারটা থেকে শুরু করে রাত আটটা পর্যন্ত কাজ চলে।
পিরোজপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আব্দুল বারী জানান, মাছের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় কাঁচা মাছের পাশাপাশি জমে উঠছে শুঁটকি মাছের ব্যবসা। প্রতি বছর শুঁটকি পল্লী থেকে কয়েক কোটি টাকার মাছ বিক্রি হয়। ফলে সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি ও মান নিয়ন্ত্রণে শুঁটকি প্রসারে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে।
এএ