বিএনপির সময় গণমাধ্যমকর্মীদের শ্রমিক বানিয়ে দেয়া হয়েছিল: তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০১-০৪ ২০:২৪:৫৯


গণমাধ‌্যমকর্মী আইনের কথা তু‌লে ধ‌রে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ব‌লেছেন, বিএনপির সময় গণমাধ্যমকর্মীদের শ্রমিক বানিয়ে দেয়া হয়েছিল। সেটি নিরসন করা প্রয়োজন ছিল। নতুন গণমাধ‌্যমকর্মী আইনে সেটি নিরসন করা হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী ব‌লে‌ন, এ আইন পাস হ‌লে সাংবা‌দিক‌দের আইনি সুরক্ষা হ‌বে। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে, মূল বিষয় ঠিক রেখেই (যে বিষয়গুলো সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা হয়েছিলো) আইনটি তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এরপরও কারো কোনো প্রশ্ন থাকলে এটি সংসদীয় কমিটিতে উত্থাপন করা যায়। কমিটি চাইলে সেখানে পরিমার্জন, পরিবর্ধন করতে পারে।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে টেলিভিশন অ্যান্ড ডিজিটাল প্রোগ্রাম প্রডিউসারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টেলিপ্যাব) সাথে বৈঠক শে‌ষে সাংবা‌দিক‌দের তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

নির্বাচন কমিশন গঠনে সংলাপ নিয়ে বিএনপি’র বিরূপ মন্তব্যের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি যে সংলাপ করছেন এর কোন বাধ্যবাধকতা ছিলো না। নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রক্রিয়াটিকে স্বচ্ছ করার জন্যেই তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ করছেন। বিএনপি যে কথাগুলো বলে সেগুলো রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েও বলতে পারে। কিন্তু সেটি না করে ক্রমাগত বাইরে বিভ্রান্তি ছড়িয়ে তারা যে গণতান্ত্রিক রীতিনীতিতে বিশ্বাস করে না সেটিই প্রমাণ করছে।’

নারায়ণগঞ্জে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকারকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আসলে বিএনপি অনুধাবন করতে পেরেছে যে তৈমূর আলম খন্দকারের বিজয় লাভের কোনো সম্ভাবনা নাই। তাই আগেই তাকে বিভিন্ন পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে পরাজয়ের যে গ্লানি, সেটি থেকে মুক্তি পাওয়ার চেষ্টা করছে।’

‘আওয়ামী লীগকে জনগণ চায় না’ ৩২ জেলায় সমাবেশ শেষে বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আসলে মির্জা ফখরুল সাহেবরা তো বছরের পর বছর দলীয় কার্যালয় নয়াপল্টনের সামনে কয়েকশ’ মানুষ দেখতেই অভ্যস্ত ছিলেন। এখন বিভিন্ন জেলায় সমাবেশে আমরা দেখেছি, তারা মারামারি করে নিজেরা নিজেদের সমাবেশ পণ্ড করেছেন। বিভিন্ন সমাবেশে হাজারো নয়, কয়েকশ মানুষ দেখেই মির্জা ফখরুল সাহেবরা খেই হারিয়ে ফেলেছেন।

‘বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের সাথে আছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে আছে এবং সরকারের সাথে আছে; নির্বাচনে তারা (বিএনপি) সেটি অনুধাবন করতে পারবেন’ বলেন হাছান মাহমুদ।

নাট্য প্রযোজকদের উদ্দেশে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, টেলিভিশন এমন একটি গণমাধ্যম যেটি মানুষের ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে। এজন্য আপনারা যখন কোন নাটক, টেলিফিল্ম বা অনুষ্ঠান বানাবেন; সেক্ষেত্রে দেশ বিনির্মাণ ও উন্নত জাতি গঠনের লক্ষ্যটি যেন ভাবনায় থাকে সে অনুরোধ জানাই।

প্রযোজকবৃন্দ নাট্য নির্মাণ ও বিপণন খাতের বিভিন্ন বিষয়ে মন্ত্রীর সাথে বিশদ আলোচনা করেন। সম্প্রচারমন্ত্রী এসময় বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত বা ক্লিনফিড সম্প্রচার বাস্তবায়ন, ক্যাবল নেটওয়ার্কে দেশি টিভি চ্যানেলগুলোর ক্রম নির্ধারণ, সমগ্র ভারতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের সম্প্রচার শুরু এবং দেশি বিজ্ঞাপনচিত্র বিদেশি শিল্পীদের অংশগ্রহণের ওপর করারোপের মাধ্যমে দেশের শিল্প-সংস্কৃতি-গণমাধ্যমকে এগিয়ে নিতে তার মন্ত্রণালয়ের সফল ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খাদিজা বেগম, টেলিপ্যাবের সভাপতি ইরেশ যাকের, সাধারণ সম্পাদক সাজু মোনতাসের, সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন দোদুল, জহির আহমেদ, আনসারুল আলম লিংকন, দপ্তর সম্পাদক এ কে এম নাহিদুল ইসলাম নিয়াজী, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম বাবলু, আর্কাইভ বিষয়ক সম্পাদক মীর ফখরুদ্দীন ছোটন, সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আইনুল ইসলাম চৌধুরী চঞ্চল এবং সদস্যদের মধ্যে এম রেজাউল করিম সজল, সাদেক সিদ্দিকী, জাকির খান, ব্যারিস্টার ওলোরা আফরিন, রাশেদা আক্তার লাজুক সভায় অংশ নেন।

এএ