দিনাজপুরে স্বামী ও সন্তানকে মৃত্যুর হুমকি দিয়ে গৃহবধূকে গণধর্ষণ
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২২-০১-০৯ ২১:৫৩:৫৮
দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১নং শিবরামপুর ইউনিয়নের ৮নং গণপৈত গ্রামে স্বামী ও সন্তানকে হত্যার হুমকি এবং ইন্টারনেটে ভিডিও প্রকাশের ভয়ভীতি দেখাইয়া গৃহবধূকে গণধর্ষণ করেন হোসেন আলী সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জন।
মোঃ বিল্লাল হোসেন গরু ব্যবসায়ী, জৈনিক বিল্লাল হোসেন ও রাবিয়া খাতুনের একমাত্র সন্তান মোঃ রাব্বি ইসলাম (৭) বাদিনি রাবিয়া এবং ফজিলাদের বাড়ি পাশাপাশি হওয়ায় মোঃ হোসেন আলী গত দুই বছর পূর্বে রাবিয়া খাতুন ফজিলা বেগমকে ধর্মবোন সম্মোধন করে, সেই সুবাদে ফজিলা বেগম নিয়মিতই যাতায়াত করিত। ফজিলা বেগম রাবিয়া খাতুনের নিকট কিছু টাকা ধার চায় এবং উক্ত টাকা রাবেয়া বেগমকে বাড়াইয়া দিবে বলে উৎসাহিত করে। রাবিয়া খাতুন সরল বিশ্বাসে ক্রমান্বয়ে ফজিলা বেগমকে ১,৫৩০০০ (এক লক্ষ তিপ্পান্ন হাজার) টাকা দেয়। ফজিলা বেগমের কাছে রাবিয়া খাতুন গত মাস পূর্বে প্রদানকৃত টাকা ও লভ্যাংশসহ ফেরত চাইলে ফজিলা বেগম রাবিয়া বেগমকে টাকা না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করে সময় ক্ষেপণ করে। গত ৭মাস পূর্বে রাবিয়া খাতুনকে তার নির্দিষ্ট টাকা হিসাবের জন্য ফজিলা বেগম দিনের বেলায় কৌশলে ফজিলা বেগমের বাড়িতে ডাকে এবং ফজিলা বেগম বাড়ির মেইন গেটে তালা বদ্ধ করে বাহিরে চলে যায়। ফজিলা বেগমের স্বামী হোসেন আলী জোরপূর্বক ভয়ভীতি দেখাইয়া রাবিয়া খাতুনকে ধর্ষণ করে এবং কৌশলে গোপনে ধর্ষণের ভিডিও ধারন করে এবং রাবিয়া খাতুনকে হুমকি দেয় এই বিষয় লইয়া বাড়াবাড়ি করলে ভিডিও ইন্টারনেটে ছেড়ে দিবো, এবং রাবিয়ার স্বামী এবং সন্তানকে অপহরন করিয়া নিয়ে হত্যা করে লাস গুম করিয়া রাখিবে। পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে রাবিয়ার নিকট হইতে আরো ২,৩৩,০০০/- (দুই লক্ষ তেত্রিশ হাজার) টাকা হোসেন আলী হাতিয়ে নেয় এবং আরও টাকা চাহিলে রাবিয়া অপরাগতা প্রকাশ করিলে হোসেন আলী কৌশলে বিল্লাল হোসেন ও সন্তানকে হত্যা করার ভয়ভীতি দেখাইয়া রাবিয়ার দ্বারা তার স্বামী বিল্লাল হোসেনকে ঘুমের ঔষধ খাওয়াতে বাধ্য করে এবং রাবিয়ার ঘরে হোসেন আলী প্রবেশ করে বিল্লাল হোসেনের নাকে রুমাল সুঙ্গিয়ে অজ্ঞান করাইয়া ৩/৪ জন ক্রমান্বয়ে রাবিয়াকে ধর্ষণ করে, রাবিয়ার নিকট আরও টাকা চায়। টাকা না দিলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়াইয়া দিবে বলে হুমকি দেয় ২৮/১২/২১ খ্রিঃ তারিখ হইতে ৩০/১২/২০২১ খ্রিঃ পর্যন্ত রাত ১১ টা হইতে হোসেন আলী সহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জন ক্রমান্বয়ে রাবিয়ার ঘরে প্রবেশ করিয়া ভোর পর্যন্ত ধর্ষণ করে রাবিয়া লোক লজ্জায় ও ভয়ে নিরুপায় হইয়া কাউকে কিছু না বলিয়া ৩১/১২/২১খ্রিঃ তারিখ বৈদ্যুতিক শক এর মাধ্যমে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করলে স্বামী বিল্লাল বুঝতে পারিয়া রাবিয়াকে রক্ষা করে।
বাদিনি রাবিয়া খাতুন ও স্বামী বিল্লাল হোসেন বীরগঞ্জ থানায় ধর্ষণ মামলা করেন, মামলার পরেই আসামিদের গ্রেফতার করতে সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল ওয়ারেজের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রেজাউল করিম, এসআই মোহাম্মদ আলী ও গ্রিস চন্দ্র রায় অভিযান শুরু করেন। অন্যদিকে বীরগঞ্জ থানার সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানের মুখে পালিয়ে যাওয়ার সময় মুরারীপুর এলাকা থেকে প্রধান আসামি হোসেন আলীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হোসেন বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। গ্রেফতার হোসেন আলী উপজেলার শিবরামপুর ইউনিয়ন গনপৈত গ্রামের মো.আব্দুল খালেকের ছেলে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা বীরগঞ্জ থানার এসআই রেজাউল বলেন, বিষয়টি শুনে ৩০ ডিসেম্বর সকালেই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং সকালে একজনকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে ওই নারীর ধর্ষণ মামলা রুজু করা হয়েছে। যাহার মামলা নং – ৪ তারিখ ৫/১/২০২২ ইং। মামলার প্রধান আসামি হোসেন আলী গ্রেফতার হয়েছে। এবং রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়েছে।
ধর্ষিতার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মাত্রা অতিরিক্ত হওয়ায় রাবিয়া খাতুন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন দিনাজপুর এম আব্দুল রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলো, সেই রিপোর্ট গুম করতে উঠেপড়ে লেগেছে হোসেন আলী। এমতাবস্থায় ধর্ষিত ও তার পরিবার নিরাপত্তা হীনতায় ভূক্তছেন। এব্যাপারে এলাকার সুশীল সমাজেরা এবং বিভিন্ন নারী সংগঠন ধর্ষণকারীর শাস্তি দাবি করেছেন।
সানবিডি/এনজে