অনিয়ম ঠেকাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ বোর্ড সভার নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২২-০১-১৬ ২১:৫৪:২৫


নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নজরদারি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে এবার অনিয়ম ঠেকাতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ বোর্ড সভা করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ভুল ও সঠিকভাবে তথ্য-উপাত্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠানোর ব্যাপারে নতুন নির্দেশনা জারি করে।

রোববার ( ১৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান কার্যালয়ের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ থেকে পরিচালিত বিশদ পরিদর্শনের ভিত্তিতে প্রণীত পরিদর্শন প্রতিবেদনের যথাযথ পালন নিশ্চিতকরণার্থে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা পর্ষদের বিশেষ সভা আহবান করবে। এই সভায় একমাত্র আলোচ্য সূচি হিসেবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান প্রধান কার্যালয়ের ওপর পরিচালিত বিশদ পরিদর্শন প্রতিবেদনটি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এবং বিশদ পরিদর্শনে প্রাপ্ত গুরুতর অনিয়ম ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগ কর্তৃক উক্ত সভায় উপস্থাপন করতে হবে।

নতুন নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠানোর দুই মাসের মধ্যে পর্ষদ সভা আহবান করতে হবে।

পর্ষদ সভায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক অথবা উপমহাব্যবস্থাপক ও পরিদর্শক দল এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলছে, সভার কার্যবিবরণী বোর্ড সভা অনুষ্ঠানের পরবর্তী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পাঠাতে হবে। আর পর্ষদ সভা অনুষ্ঠানের কমপক্ষে ১০ কার্যদিবস আগে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করতে হবে।

নির্দেশনায় বাংলাদেশ ব্যাংক আরও বলেছে, পরিদর্শন প্রতিবেদনের উল্লেখিত সুপারিশ ও অনিয়ম, ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলোর দফাওয়ারি পরিপালনের অগ্রগতি সময়ে সময়ে বোর্ড সভায় উপস্থাপন করতে হবে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের আগের মতো ঋণ দিতে পারছে না। শুধু তাই নয়, দেশের ৯টি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বড় অঙ্কের ঋণ জালিয়াতির কারণে সার্বিকভাবে এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, মাত্র পৌনে তিন বছরেই এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে দ্বিগুণ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করার কারণে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান ধীরে ধীরে সংকটে পড়ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মোটা অঙ্কের অর্থ আটকে রয়েছে। এগুলোর বিপরীতে কোনও আয় হচ্ছে না। অন্যদিকে, প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের রাখা আমানত সময়মতো ফেরত দিতে পারছে না। এ কারণে আগের মতো আর আমানতও আসছে না।

এএ