নবীনদের পদচারণায় মুখরিত জবি ক্যাম্পাস
প্রকাশ: ২০১৬-০২-১১ ১৬:৪৩:৩৭
বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার অন্যতম বিদ্যাপীঠ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে অতিবাহিত হয়েছে প্রতিষ্ঠার এক দশক। এরই সঙ্গে যোগ হলো শিক্ষার্থীদের আরও একটি ব্যাচ। গান আড্ডা ও বন্ধুদের সঙ্গে পরিচয়ে সবাই যেন ব্যস্ত। ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হওয়া শিক্ষার্থীদের জন্য সত্যিই অনেক আনন্দের। চান্স পাওয়ার পর প্রত্যেকেই ক্যাম্পাস নিয়ে মনে মনে আঁকতে থাকে নানা স্বপ্ন, নানা পরিকল্পনা।
প্রস্তুতি নিতে থাকে ক্যাম্পাসের প্রথম দিন কীভাবে কাটাবে এবং কী করবে। প্রবীণরাও প্রস্তুতি নিতে থাকে কীভাবে নবীনদের বরণ করে নেয়া যায়। প্রস্তুতি শেষে ওরিয়েন্টেশনের দিনেই সেটি প্রকাশ পায়। সবাই ভেসে যায় আনন্দের জোয়ারে। নানা আয়োজন আর আনন্দঘন পরিবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত স্নাতক (সম্মান) প্রথমবর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত হয়।
ক্যাম্পাস মেতেছিল উত্সবের আমেজে। নবীন ছাত্রছাত্রীরা সকাল থেকেই ক্যাম্পাসে আসতে শুরু করে। অনেক নবীনের সঙ্গে আবার তাদের অভিভাবকদেরও দেখা গেছে। পাশাপাশি ক্যাম্পাসের প্রবীণরাও এসেছেন সাজগোজ করে নানা আয়োজনে নবীনদের বরণ করে নিতে। প্রবীণ ছাত্রীদের কেউ কেউ শাড়ি পরে ও ছেলেরা এসেছে পাঞ্জাবি অথবা শার্ট-কোর্ট-টাই পরে।
প্রত্যেক বিভাগে পৃথক পৃথকভাবে বিভাগীয় প্রধানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় ওরিয়েন্টেশন ক্লাস। ওরিয়েন্টেশন ক্লাসে স্ব স্ব বিভাগের শিক্ষক ও নবীন-প্রবীণ শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষকরা নবীনদের রজনীগন্ধা ও গোলাপ ফুল উপহার দেয়ার মাধ্যমে ক্যাম্পাসে স্বাগত জানান। এ সময় শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতিমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলার জন্য নবীনদের প্রতি আহ্বান জানান।
নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষে সবাই যখন স্ব স্ব বিভাগ থেকে বেরিয়ে আসে তখনই আনন্দের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। সবার হাতে হাতে ফুল, সবাই একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে। অনেকে ব্যস্ত গ্রুপ সেলফি তোলায়। অনেকে আবার বসে পড়েছে আনন্দ আড্ডায়। প্রবীণরাও নবীনদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছে, বিতরণ করছে রজনীগন্ধা ও লাল গোলাপ। ক্যাম্পাসে পুরোটা দিন অতিবাহিত হয়েছে এমনই এক আনন্দঘন পরিবেশে। আকাশ ছোয়াঁ স্বপ্ন নিয়ে নতুন ক্যাম্পাসে নতুন জীবনের শুরু! সত্যিই এক অন্যরকম অনুভূিত
ক্যাম্পাসের এই প্রথমদিনে কথা হয় গনযোগাযোগ সাংবাদিকতা বিভাগের নবীন ছা্ত্র মাসুম বিল্লাহ সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাহাদাত হোসেন বাংলা বিভাগের ছাত্র শরীফুল ইসলাম ,হিসবাবিজ্ঞানের ছাত্র জিহান ও আইনের ছাত্র নাবিলের সঙ্গে। তারা প্রথম দিনের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পেরে সত্যিই অনেক আনন্দিত। কেননা বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। আবাসিক হলের ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য সমস্যা হবে। তবুও এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে চান্স পেয়ে আমরা গর্বিত ।আশা করছি আমাদের পথচলা উজ্জল হবে ।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অরূন কুমার গোস্বামী নবীনদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান হয় সেমিস্টার সিস্টেমে। আর সেমিস্টার সিস্টেমে শিক্ষার্থীদের ফাঁকি দেয়ার সুযোগ খুব কম। শিক্ষক ও অভিভাবক হিসেবে আশা করব ছাত্রছাত্রীরা এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম অনুযায়ী নিজেদের প্রস্তুত করবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান ভর্তিযুদ্ধে জয়ী নবীনদের উদ্দেশে বলেন, বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রতিযোগিতার যুগে সবাইকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। নতুন ক্যাম্পাসে নতুন শিক্ষার্থী হিসেবে সবাইকে ক্যাম্পাস গড়ার কাজেও অংশীদার হতে হবে। সবার সহযোগিতা, আন্তরিকতা ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান বিকাশের মাধ্যমেই এ বিশ্ববিদ্যালয় একদিন দেশ-বিদেশে সুনাম ছড়িয়ে দেবে।
সানবিডি/ঢাকা/ইসমাইল/এসএস