ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে কর্মী সঙ্কটে চট্টগ্রামের পোশাক খাত
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২২-০১-২৯ ১৫:১১:২৩
মহামারি করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে সঙ্কটের মুখে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পোশাক কারখানাগুলো। দেখা দিয়েছে কর্মী সঙ্কট। নগরীর রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল-সিইপিজেড ও কেইপিজেডসহ প্রায় প্রতিটি কারখানার গেইটে এখন ঝুলছে জরুরি ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি।
করোনা মহামারির মধ্যেও অর্ডারের কমতি ছিল না পোশাক কারখানাগুলোতে। কিন্তু গত বছর থেকে লকডাউনের কারণে বড় ধরনের ধাক্কার আঁচড় পড়ে এ খাতে। তবুও একের পর এক অর্ডারের কারণে এ ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে দেশের রফতানি আয়ের বড় এই খাত।
সময়মতো শিপমেন্ট ধরে রাখতে কাজের এই বাড়তি চাপ সামাল দিতে দরকার হচ্ছে বাড়তি লোকবল। শুধু তাই নয়, চাপ সামাল দিতে অনেক কারখানায় চলছে দুই শিফটের কাজ। বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও এরিয়ন ড্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আতিক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাড়তি অর্ডার থাকলেও উৎপাদন সক্ষমতার তুলনায় বেশির ভাগ কারখানাতেই কর্মী ঘাটতি ২০-২৫ শতাংশ। কর্মী সঙ্কটের মধ্যে চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। ফলে সতর্কতার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে কারখানা মালিকদের।
নাসিরাবাদ শিল্প এলাকার এসবি নিট ফ্যাশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ইলিয়াছ চৌধুরী বলেন, গত দুই বছর দফায় দফায় লকডাউনে অনেক কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। কেউ কেউ পেশা পরিবর্তন করেছেন। ১৫ থেকে ২০ শতাংশ নারী শ্রমিক বিয়ে কিংবা গ্রামে কাজ পাওয়ার কারণে আর ফিরে আসেননি। ফলে কর্মী সঙ্কটের মুখে পড়েছে বন্দরনগরীর পোশাক কারখানাগুলো।
তিনি বলেন, সঙ্কটের মধ্যেই রফতানি অর্ডার সবচেয়ে বেশি এসেছে। চট্টগ্রামের প্রতিটি কারখানা ক্যাপাসিটির চেয়ে অতিরিক্ত অর্ডার নিয়েছে। কিন্তু কর্মীর অভাবে অর্ডার অনুযায়ী উৎপাদন ঠিক রাখতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই জরুরি ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি টাঙানো হয়েছে। তবে রাতারাতি এই কর্মী সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। ফলে বিকল্প হিসেবে অনেক কারখানা মালিক অত্যাধুনিক মেশিন এনে সঙ্কট সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ আবার দুই শিফটে কারখানা চালু রাখছেন বলে জানান তিনি।
শ্রমিকরা জানান, বেশির ভাগ কারখানাতেই দুই শিফটে কাজ চলছে। এতে উৎপাদন সচল থাকলেও অতিরিক্ত চাপ পড়ছে শ্রমিকদের ওপর। অবশ্য তাদের সুযোগ-সুবিধাও বাড়ানো হয়েছে।
বিজিএমইএয়ের তথ্য মতে, চটগ্রামে রফতানিমুখী নিবন্ধিত পোশাক কারখানা রয়েছে ৬৯৪টি। এর মধ্যে চালু থাকা ২৫৩টি কারখানায় কর্মরত আছেন প্রায় ৪ লাখ কর্মী। ঘাটতি পূরণে প্রয়োজন আরও ১ থেকে দেড় লাখ কর্মী। উৎপাদন ক্ষমতার চেয়ে কর্মী ঘাটতির এই হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশ। এ ছাড়া কোভিড-১৯-এর আগে পোশাক খাতে সারা দেশে মোটামুটি ৪৪ লাখ কর্মী ছিল, এখন তা কমে ৩৩ লাখে নেমে এসেছে। তবে বাজারের বর্তমান চাহিদা বজায় রাখতে বর্তমানে কমপক্ষে ৩৮ লাখ শ্রমিক প্রয়োজন।
সানবিডি/এনজে