পুঁজিবাজারে জালিয়াতির সুযোগ দেয়া হবে না: বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০১-৩০ ২১:১৯:৫৩


পুঁজিবাজারে কাউকে প্রতারণা ও জালিয়াতির সুযোগ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম। তিনি বলেন, কয়েকজনের কারণে আমাদের কঠোর হতে হয়। তাদের সমাজ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। তাহলে বাকিরা সহজে ব্যবসা করতে পারবেন।

রোববার (৩০ জানুয়ারি) বিএসইসি মিলনায়তনে সিডিবিএল এর মাধ্যমে মাসিক বিও হিসাবের পাঠানোর কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, অর্থ ফেরতের নিরাপত্তা না থাকলে কেনো বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আসবে। কারও কষ্টের টাকা যদি অন্য কেউ আত্মসাত করে নেয়, তাহলে বিনিয়োগকারীরা শেয়ারবাজারে আসবে না। এছাড়াও আমাদের শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের বিপরীতে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের রিটার্ন দিতে না চাওয়ার মানসিকতা আরেকটি বড় সমস্যা। এই দুটি বিষয় বাজার উন্নয়নে বড় বাধাঁ।

তিনি বলেন, আমরা আসার পরে (দায়িত্ব গ্রহন) ২-৩টি ব্রোকারেজ হাউজে অনিয়মের ঘটনা দেখেছি। কাস্টমার অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা-পয়সা সরিয়ে ফেলা হয় ও বিভিন্ন রকম সফটওয়্যার ব্যবহার করে মানুষের সাথে জালিয়াতি করা হয়। এই জিনিসগুলো বন্ধ করার জন্য সিডিবিএলের মাসিক স্টেটমেন্ট প্রদান সেবাটি খুবই জরুরী। এর মাধ্যমে কাস্টমারদের প্রতারণা কমবে। কারন এখন থেকে ব্রোকারেজ হাউজ থেকে যে পোর্টফোলিও পাঠানো হয়, তারসঙ্গে সিডিবিএলের স্টেটমেন্টের সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। যাতে ব্রোকারেজ হাউজে কোন রকম প্রতারণার আশ্রয় নিলে, তা বিনিয়োগকারী বুঝতে পারবে।

সিডিবিএলের মাসিক স্টেটমেন্ট প্রদানের সেবাটি গ্রহনের জন্য বিনিয়োগকারীদের মেইল ঠিকানাটি সঠিক হতে হবে বলে জানান অধ্যাপক শিবলী। এছাড়া মোবাইল নাম্বারটা সঠিক হওয়াও জরুরী। কারন এই দুটি জায়গায় অনেক চালাকি করা হয়। এরকম কাজ কারও মধ্যে দেখা দিলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা সেটার জন্য ব্যবস্থা নেব। আমরা কোন ধরনের প্রতারনা বা জালিয়াতির সুযোগ দিতে চাই না। আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। এজন্যই দিনে দিনে কমিশন কঠোর হচ্ছে।

সিডিবিএল কর্তৃপক্ষকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা নিয়মিত বিনিয়োগকারীদেরকে স্টেটমেন্ট পাঠাবেন। এমনকি বিনিয়োগকারীরা যাতে নিজেরাই ঢুকে পোর্টফোলিও চেক করে নিতে পারেন, সে ব্যবস্থা করবেন। যাতে কোন ব্রোকারেজ প্রতারণার আশ্রয় নিলে সাথে সাথেই ধরা পড়ে যায়। এছাড়াও যদি বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য অন্য কোন উপায় থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তবে সবসময় ব্রোকারেজ হাউজের মালিকদেরকে দোষারোপ করা যাবে না। কারন অনেক সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিজেরাও অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। যেটা মালিকপক্ষ জানে না।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদেরকে হ্যাকিংয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ নিতে হবে। যাতে হ্যাকাররা কোনভাবেই হ্যাক করে আমাদেরকে সমস্যায় ফেলতে না পারে। কারন দেশে-বিদেশে হ্যাকাররা খুবই বুদ্ধিমান। তারা আমেরিকার মতো দেশে হ্যাক করে স্বার্থ আদায় করে নিচ্ছে। সুতরাং হ্যাকিং খুবই ভয়াবহ বিষয় হয়ে দাড়িঁয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএসইসির কমিশনার শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, সিডিবিএলের আজকের মাসিক স্টেটমেন্টের মতো যত সার্ভিস চালু করা যাবে, শেয়ারবাজারের প্রতি তত বিশ্বাস তৈরী হবে। যেটা শেয়ারবাজারের জন্য খুবই জরুরী।

তিনি বলেন, কোন বিনিয়োগকারীর যদি ব্রোকারেজ হাউজ থেকে বা অন্যকোনভাবে টাকা ও শেয়ার গায়েব হয়ে যায় এবং তা ফেরত না পাওয়া যায়, তাহলে আত্মসাতকারীকের যতই শাস্তি দেওয়া হোক না কেনো, তাতে প্রকৃতপক্ষে কোন লাভ হবে না। তবে আত্মসাতের মতো অনিয়ম মূর করতে সিডিবিএলের মাসিক স্টেটমেন্ট প্রদান সেবাটি কাজে আসবে বলে তিনি মনে করেন।

অনুষ্ঠানে বিএসইসির আরেক কমিশনার আব্দুল হালিম বলেন, আমাদের শেয়ারবাজারে আইন-কানুন পর্যাপ্ত আছে। তারপরেও কিভাবে বিনিয়োগকারীদের সম্পদ আত্মসাতের মতো ঘটনা ঘটে, তা খুজেঁ বের করার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

পুঁজিবাজারের সব খবর পেতে জয়েন করুন 

Sunbd Newsক্যাপিটাল নিউজক্যাপিটাল ভিউজস্টক নিউজশেয়ারবাজারের খবরা-খবর

এএ