বইমেলায় ‘যে রাত দিন হয় না’
প্রকাশ: ২০১৬-০২-১৩ ১১:১৭:৪৭
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় পাঠকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে লেখক ও সাংবাদিক এম.উমর ফারুকের উপন্যাস ‘যে রাতের দিন হয় না’। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলায় দেশ পাবলিকেশন্সের ৪০৭ ও ৪০৮ নং স্টল থেকে সংগ্রহ করছে বইটি। শরীর শিউরে ওঠার মত গল্প নিয়ে সাজানো বই।
সামান্য ভুল সিদ্ধান্তের কারনে এক অশুভ ঝড়ের মুখোমুখি হন বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া ছাত্রী মেঘলা। থমকে যায় পড়ালেখা।সহপাঠি বন্ধু বান্ধব পরিবার ও আত্বীয় স্বজন মুখ ফিরে নেয় মেঘলার থেকে। বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত পাড়ি দিয়ে মেঘলা হয় যৌনপল্লীর বাসিন্দা। এক সময় ফ্ল্যাটে দেহব্যাবসা শুরু করেন।স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রবল ইচ্ছে থেকেই ঘর বাধার ব্যর্থ স্বপ্ন দেখেন। বয়ষের ভাড়ে মেঘলার ঠিকানা হয় বৃদ্ধাশ্রমে। রোগ শোকে কাতর মেঘলা চলে যায় অন্ধকারের শেষ ঠিকানায়। ৬৪ পৃষ্ঠার বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মোস্তাফিজ কারিগর। বইটির মুল্য-১৪০টাকা।
বইটি ইতোমধ্যে সাড়া ফেলছে বলে দাবি করে লেখক এম.উমর ফারুক বইটি সম্পর্কে বলেন, যে রাতের দিন হয় না উপন্যাসের গল্পটি প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া ঘটনার মধ্যে একটি। তবে, সমাজের মানুষের চলমান জীবনের নেপথ্যে লুকিয়ে থাকে নানা রকম ঘটনা। কারো সঙ্গে কারো জীবনের যেমন মিল নেই, তেমনি ঘটে যাওয়া ঘটনারও মিল থাকে না। আর এ ঘটনার জন্য দায়ি থাকে এ সমাজ। সমাজপতিরাও লীলা খেলায় মত্ত থাকেন।
তিনি বলেন, দায়িত্ব আর কর্তব্য শব্দগুলো তাদের কাছে অসহায়। এ সমাজে নির্যাতিত নারীরা পাহাড়সম সমস্যা আর সংকটকে ঠেলে মাথা উঁচু করে দাড়ানোর চেষ্টা করে বার বার। কিন্তু অদৃশ্য সূতার টানে পশ্চাতে ফিরতে হয়। নারীদের দেহভোগেই যখন আবশ্যক। তখন নিজেকে জীবিত রাখা অনেকটা মূল্যহীন বলে মনে করেন নারীরা।সমস্যার বেড়াজালে আর জীবনের প্রতিটি ধাপে-ধাপে জীবন যুদ্ধে জয়হীন সৈনিক মেঘলা। তার প্রথম ভুলটির সমাধান অন্যরকম হতে পারতো। এ জন্য সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
কথাসাহিত্যিক এম.উমর ফারুক ১৯৯৭ সালে কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে লেখালেখি শুরু করেন।১৯৯৮ সাল থেকে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলাতে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ২০০৪ সালে চিলমারী থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক জনপ্রাণ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা বার্তা সম্পাদক ও পরে নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।এক পর্যায়ে ২০০৫ সালে ঢাকায় দৈনিক যুগান্তরের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন।
এর পর বিভিন্ন দৈনিক আমাদের সময়, দৈনিক মানবকণ্ঠ, দৈনিক সংবাদ,দৈনিক জনতায় কাজ করেন। সর্বশেষ দৈনিক আজকের পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক হিসেবে কাজ করেন।
উপন্যাস ছাড়াও তিনি ছড়া,কবিতা, গল্প,প্রবন্ধ, গানও নাটক লেখেন নিয়মিত। তার লেখা একাধিক নাটক টিভিতে প্রচারিত হয়েছে। তার লেখা গানের বেশ কয়েকটি এ্যালবামও প্রকাশ পেয়েছে।
লেখক এর আগেও ঢাকা রির্পোটাস ইউনিটি লেখক সম্মাননা- ২০১৫,২০১৪,২০১৩ও২০১১ পেয়েছেন। জাতীয় মানবাধিকার পদক-২০১২ হাছন রাজা স্মৃতি স্বর্ণ পদক-২০১০ পান। চিলমারী পাবলিক লাইব্রেরী লেখক সংবর্ধনা পান। ছান্দসিক সাহিত্য সেরা কবি ২০০৮ ও বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদ হতে ছান্দসিক কবি পদক-২০০২ লাভ করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক সাংষ্কৃতিক সংগঠণ থেকে সংবর্ধিত হন। লেখক সৃজন সাহিত্য পরিষদ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মাসিক সাহিত্য পত্রিকা বেলা অবেলা’র সম্পাদক।
এম.উমর ফারুক ১৯৮৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার তবকপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাদুল্যা তেলীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।তিনি মো. গোলাম হোসেন সরকার ও আনোয়ারা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে সবার বড়। লেখক ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে এল এল বি অনার্স ও এল এল এম পাশ করেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস