ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক নড়াইলেও আজ বসন্ত
প্রকাশ: ২০১৬-০২-১৩ ১৮:০৬:৪১
বাংলার ঋতু বাসন্তী রঙে সাজায় মনকে, মানুষকে করে আনমনা। শীতের জীর্ণতা সরিয়ে ফুলে ফুলে সেজে ওঠে প্রকৃতি। গাছে গাছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিতে বাতাসের সঙ্গে বয়ে চলা জানান দেয় নতুন কিছুর। দখিনা হাওয়া, ঝরা পাতার শুকনো নুপুরের নিক্কন, প্রকৃতির মিলন এ বসন্তেই। বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। বসন্ত মানেই একে অপরের হাত ধরে হাঁটা।
শীতে খোলসে ঢুকে থাকা বনবনানী অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠে। পলাশ, শিমুল গাছে লাগে আগুন রঙের খেলা। প্রকৃতিতে চলে মধুর বসন্তে সাজ সাজ রব। আর এ সাজে মন রাঙিয়ে গুন গুন করে অনেকেই গেয়ে উঠবেন- ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত… কিংবা ‘মনেতে ফাগুন এলো..’। ।প্রতিবছর নিয়ম করেই ঋতুরাজ বসন্ত ফাল্গুন আর চৈত্রকে নিয়ে এসে উকি দেয় ষড়ঋতুর ঘরে, এগিয়ে থাকা ফাল্গুনের প্রথম প্রহর থেকেই শুরু হয় তার আগমন। শীতের শেষ তথা মাঘের মাঝামাঝি থেকেই প্রকৃতিতে বইতে থাকে বসন্তের আগমনী হাওয়া, এ যেন জানান দেয়া আমি ঋতুরাজ আমি বসন্ত আমি আসছি।হীমেল হাওয়া অথচ তপ্ত নয়, আবার তপ্ত বাতাস অথচ হিমেলও নয় এ এক অপূর্ব অনুভুতির হাওয়া প্রকৃতিতে বয়ে চলে পুরো বসন্ত জুড়ে।
আর তাইতো বসন্ত নিয়ে রচিত হয়েছে অজস্র গান কবিতা। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বসন্তের খোলা হাওয়ায় মন মাতিয়ে কখনো গেয়েছেন “ আহা আজি এ বসন্তে, এত ফুল ফোটে, এত বাঁশি বাজে, এত পাখি গায়, আহা আজি এ বসন্তে” আবার কখনো স্বপ্নবিভোর হয়ে রচনা করেছেন “ আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে, তব অবগুন্ঠিত কুন্ঠিত জীবনে করো না বিড়ম্বিত তারে ” কবি সুভাস মূখোপাধ্যায় বসন্তের আগমনীতে যেন অনুরাগ নিয়েই লিখেছেন “ ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক আজ বসন্ত ” কখনো বসন্তের আপ্লুত ভালোবাসায় কেউ যেন গেয়ে উঠে “ তুমি এলে বসন্ত আসে বনে দোলা লাগে বিরহী এ প্রানে ”।
লোহাগড়া নিরিবিলি, স্বপ্নবিথি ও অরুনিমা রিসোস সহ দেশের অন্যান্য জায়গাগুলোতেও চলবে বসন্ত বরণের আনুষ্ঠানিকতা। সর্বপরি বাঙ্গালী সংস্কৃতিতে পহেলা বৈশাখের পরেই পহেলা ফাল্গুনের জনপ্রিয়তা সবচাইতে বেশি। বাঙ্গালী সংস্কৃতিতে ষড়ঋতু নিয়ে ভালোবাসার যেন কমতি নেই।সব ঋতুকে বরন করে নেয়ার পর ঋতুরাজ বসন্তে এসে ক্ষান্ত হয় বরণডালা, প্রকৃতিতে আসে পরিবর্তন, পুরোনোকে পেছনে ফেলে এগিয়ে আসে নতুনের হাতছানি।
ঋতুরাজ বসন্তকে নিয়ে তাইতো ভালোবাসার কমতি নেই, ফাল্গুনের প্রথম প্রহরে শহুরে মানুষগুলো নাচে গানে মুখরিত করে বরণ করে নেয় বসন্তকে। পাইলটের বকুলতলায় সকাল খেকেই শুরু হবয়ছে বসন্ত বরণের অনুষ্টান “ পহেলা ফাল্গুন ”। বসন্ত নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠান থাকবে আশেপাশের বিভিন্ন স্থানে। বাসন্তী রঙের শাড়িতে সবুজ আঁচল উড়িয়ে রমণীরা ছুটে চলবে পুরো শহরময়।
গাছের শাখায় পুরোনো পাতা ঝরে নতুন পাতা গজিয়ে উঠে, বেজে উঠে ঝরাপাতার গান “ শেষ পাতা ঝরে গেল যেতে যেতে বলে গেল এবছর আমি আর আসবোনা, আগামী ফাগুনে জানালায় দাঁড়িয়ে আমার প্রতিক্ষা করো।