বাংলাদেশের প্রতি ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্টের কৃতজ্ঞতা
আপডেট: ২০১৬-০২-১৪ ১৫:৫২:৩৪
ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও সহযোগিতায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
ঢাকায় শনিবার রাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকে তিনি এ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
জর্ডান থেকে জাপান যাওয়ার পথে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মাহমুদ আব্বাসের যাত্রাবিরতির সময় তাদের এ বৈঠক হয়।
রাত পৌনে ১টার দিকে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্টকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ঘণ্টাখানেক পর টোকিওর উদ্দেশে যাত্রা করেন মাহমুদ আব্বাস।
ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি বাংলাদেশের ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে প্রেসিডেন্ট ঢাকায় তার প্রথম যাত্রাবিরতি করলেন বলে ফিলিস্তিন দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস একই সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে পড়ার সুযোগ এবং সেদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বাংলাদেশে সামরিক প্রশিক্ষণের সুযোগ দেয়ার জন্যে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে স্বাধীন ভূমির জন্যে ফিলিস্তিনি মানুষের সংগ্রামের প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আবারও অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দেয়া হয়।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ফিলিস্তিন প্রেসিডেস্টকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘসহ সব আন্তর্জাতিক ফোরামেই ফিলিস্তিনের প্রতি তার সমর্থনের বিষয়টি তুলে ধরেছেন।
মন্ত্রী এ সময় ফিলিস্তিন সংকটের সমাধানের জন্যে কার্যকর উদ্যোগ নিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান।
তিনি এ সময় দ্বিপাক্ষিক সফরে এসে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সমর্থন প্রত্যক্ষ করার জন্যে মাহমুদ আব্বাস ও ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান।
বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে চমৎকার সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলিদের নৃশংসতার পাশাপাশি অনেক দিন ধরে অচলাবস্থায় থাকা শান্তি আলোচনার সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে অবহিত করেন মাহমুদ আব্বাস।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনের প্রতি বাংলাদেশ অব্যাহত সমর্থন ব্যক্ত করায় প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস এশিয়া সফরে ঢাকায় প্রথম যাত্রাবিরতি করেন। এরপর তিনি এশিয়ার আরও তিন দেশ সফর করবেন।
ফিলিস্তিন নেতাকে স্বাগত জানানোর সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী ছাড়াও বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, চিফ অব প্রটোকল আসাদ আলম সিয়ামসহ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে শুভেচ্ছা জানাতে ঢাকায় অবস্থানরত সব আরব দেশের রাষ্ট্রদূতরা বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন। বিমানবন্দরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ফিলিস্তিনি ইস্যু বিশেষ করে জেরুজালেম পরিস্থিতি এবং ইসরাইলি আগ্রাসন নীতি বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে আলোচনা হয়।
গত সেপ্টেম্বর থেকে ইসরাইলের আগ্রাসন বৃদ্ধি পাওয়ায় এ পর্যন্ত ১৭০ জন নিরীহ ফিলিস্তিনি নারী, শিশু, যুবক প্রাণ দিয়েছেন। এছাড়াও, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়।
প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রিয়াদ আল মালিকী, প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র নাবিল আবু রুধিনি, কূটনীতিবিষয়ক বিশেষ উপদেষ্টা ড. মাজিদি আল খালিদি, বিশেষ অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মোস্তফা আল রব এবং জর্ডানে ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ড. আত্তাল্লাহ খাইরি।
বিমানবন্দরের ভিভিআইপি লাউঞ্জে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। ফিলিস্তিনি প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ঢাকায় ফিলিস্তিনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ইউসেফ এসওয়াই রামাদান।