রাজশাহীতে ২ কিশোরকে বেঁধে নির্যাতন(ভিডিও)

আপডেট: ২০১৬-০২-১৪ ১১:৩৩:১৩


Rajshahiরাজশাহীর পবায় মোবাইল ফোন চুরির কথিত অভিযোগে দুই কিশোরকে বেঁধে বর্বর নির্যাতনের পর ভিডিও ধারণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামে এ অমানবিক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শনিবার রাতে পবা থানায় এজাহার দেয়া হয়েছে। পুলিশ অভিযোগটির তদন্ত শুরু করেছে।

এদিকে দুই কিশোরকে নির্যাতনের ভিডিও প্রচার হলে এই নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নির্যাতিত দুই কিশোরের একজনের  নাম জাহিদ হাসান (১৫) ও অন্যজন হলো ইমন আলী (১৩)। জাহিদ চৌবাড়িয়া এলাকার ইমরান আলীর ছেলে ও স্থানীয় বাগসারা হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। ইমনের বাবা-মা কেউই বেঁচে নেই। সে থাকে এলাকার মকবুল হোসেন নামের একজনের বাসায়, তার বাবার নাম মাসুদ রানা।

অভিযোগের সূত্র উল্লেখ করে পবা থানা পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে চৌবাড়িয়া এলাকার ফজলুর রহমানের ছেলে রাকিবুল হাসানের একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। ফোন চুরির অভিযোগে রাকিব ও তার সহযোগীরা প্রথমে ইমনকে ও বিকলে জাহিদকে ধরে নিয়ে যায়। বাড়িতে নিয়ে দুই কিশোরকে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে বেদম মারধর করা হয়। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দুই কিশোরকে মোবাইল ফোন চুরির স্বীকারোক্তি আদায়ে পালাক্রমে চলে নির্যাতন।
অভিযোগ মতে, রাকিব ছাড়াও নির্যাতনে অংশ নেন পলাশ হোসেন, নাসির উদ্দিন, জামাল উদ্দিন, আব্দুর রাজ্জাক , অনিক ইসলাম ও তুহিনসহ ১০-১২ জন।

এদিকে নির্যাতনের সময় তাদেরই একজন মোবাইল ফোনে পুরো দৃশ্য ধারণ করেন। নির্যাতনের পরও ফোন চুরির স্বীকারোক্তি না পেয়ে জাহিদ ও ইমনকে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টায় ছেড়ে দেয়া হয়।   পুলিশে অভিযোগকারী জাহিদের বাবা ইমরান আরো জানান, শুক্রবার রাতে তার ছেলেকে পবা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। জাহিদের শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে গেছে লাঠির আঘাতে। অন্যদিকে ইমন আরো নির্যাতনের ভয়ে রাতেই এলাকা থেকে ছেড়ে চলে গেছে।

আহত কিশোর জাহিদ হাসান জানান, তাকে নির্যাতনকারীদের মধ্যে নাসির উদ্দিন সেনা সদস্য। তিনি ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছেন। তিনিও নির্যাতনে অংশ নেন।

ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, সেনা সদস্য লাঠি দিয়ে দুই শিশুকে বেদম প্রহার করেন। আর এসময় দুই কিশোর নির্যাতনে চিৎকার দিয়ে বাঁচাও বাঁচাও বলছে।

জাহিদের বাবা ইমরান অভিযোগ করে  বলেন, জাহিদকে নির্যাতনের পর থেকেই নাসির এবং তাদের লোকজনের পক্ষ থেকে অব্যাহত হুমকি দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে থানায় বা অন্য কোথাও অভিযোগ করতে বাধা দেয়া হয়েছে। এরপরও তিনি শনিবার রাতে থানায় এজাহার দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ শনিবার রাত পর্যন্ত  কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

দুই কিশোর নির্যাতন ও জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে পবা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে কিশোর জাহিদের বাবা ইমরানের কাছ থেকে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ভিডিওটিও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। নির্যাতনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

https://youtu.be/Jk6Z5TVtPxo

সানবিডি/ঢাকা/এসএস