আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা না এলে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হবে: ড. দেবপ্রিয়

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০২-১৯ ১৯:১৫:১৭


সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, আর্থিক খাতে যোগ্যতা, দক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না গেলে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। তাই স্বাধীনতাবিরোধী, ঋণখেলাপি, করখেলাপি, বিলখেলাপি, দুর্নীতিবাজরা যেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সে বিষয়ে নতুন নির্বাচন কমিশনকে দৃঢ় অবস্থান দেখাতে হবে।

শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে ‘আর্থিক খাতের শঙ্খলা রক্ষায় সরকারের সদিচ্ছা’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এতে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোর মধ্যরাতে সভা করে ঋণখেলাপিদের দায়মুক্তি দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া নৈতিকতা বিরোধী। যে পরিমাণ ঋণ আদায় করা হয়, এর চেয়ে অনেক বেশি অবলোপন করা হচ্ছে। ব্যাংকিং সেক্টরে ১০ শতাংশ ঋণখেলাপির যে তথ্য দেওয়া হয়, সেটি সঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, কোনো ঋণখেলাপি যাতে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্সের সদস্য হতে না পারে, সে বিষয়ে ব্যাংক মালিকদের সতর্ক থাকতে হবে। একইসঙ্গে ঋণখেলাপি ও আর্থিকখাতে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক ঘৃণা ছড়িয়ে দিতে হবে।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, আর্থিক খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সদিচ্ছা ও যোগ্যতার অভাব রয়েছে। তাই ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় জড়িত প্রভাবশালী ব্যক্তিরা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা এড়িয়ে চলেন। গণতন্ত্র ও সুশাসনের পাশাপাশি আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা বজায় রাখা টেকসই উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য। আর্থিক খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন টেকসই হবে না। অনেক দৃশ্যনীয় মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও আর্থিক খাতে সুশাসনের অভাবে শ্রীলঙ্কার মতো দেশকে বাংলাদেশ থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, আর্থিক খাতে বিশৃঙ্খলা দিনে দিনে ক্যানসারের রূপ ধারণ করছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতির পরিধি সংকুচিত করছে। আর্থসামাজিক খাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন অব্যাহত থাকলেও আর্থিক খাতের অনিয়ম আমাদের জন্য একটি কালো অধ্যায়। অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিয়ে সরকার গর্ববোধ করলেও ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা লজ্জিত হই।

প্রতিযোগিতায় সমান নম্বর পেয়ে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা যৌথভাবে বিজয়ী হন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক রেজাউল হক কৌশিক, সাংবাদিক কাবেরী মৈত্রেয় ও সাংবাদিক রিজভী নেওয়াজ।

এএ