ভারতের অবদান ভুলতে পারব না : তথ্যমন্ত্রী

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২২-০২-২৩ ২১:২৬:০৩


বাংলাদেশ ও ভারতের মানুষের মৈত্রীর বন্ধন রক্তের অক্ষরে লেখা মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতাসংগ্রামে ভারতের অবদান বাংলাদেশ কখনো ভুলবে না এবং তা ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে দুই দেশের সম্পর্ক এখন অনন্য উচ্চতায়।

বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন আয়োজিত এ উৎসব উদ্বোধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ত্রিপুরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে।

ত্রিপুরার তথ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, বাংলাদেশের মমতাজ বেগম, সাইমুম সারওয়ার কমল, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, ভারতে বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার নুরুল ইসলাম বিশেষ অতিথি হিসেবে এবং আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার আরিফ মোহাম্মদ অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

উৎসব উদ্বোধক তথ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‌’মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশের এক কোটি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছিল এবং বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকারের ফাঁসির আদেশের পর বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করার জন্য তৎকালীন ভারত সরকার পৃথিবীর দেশে দেশে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়েছিল। ভারতের এ অবদান আমরা কখনো ভুলতে পারব না। ত্রিপুরার মানুষ তাদের রাজ্য এবং মনের দুয়ার দুটিই ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অবারিত করে দিয়েছিলেন এবং বাংলাদেশ থেকে আসা লাখ লাখ শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিলেন, যা তারা বোঝা মনে করেন নাই। ‘ এ প্রসঙ্গে তিনি ত্রিপুরার মানুষ এবং তৎকালীন রাজ্য সরকারের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘ত্রিপুরাকে নিয়ে আমার আবেগ এবং উচ্ছ্বাস রয়েছে। আমরা দুই দেশের মানুষ হলেও আমাদের ভাষা এক, সংস্কৃতিরও মিল রয়েছে। আমরা একই পাখির কলতান শুনি। ত্রিপুরার অনেকেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে অবদান রেখেছেন। ‘ তাদের অনেককেই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে পুরস্কৃত করা হয়েছে উল্লেখ করে তাদের মধ্যে জীবিত এবং মৃত্যুবরণকারীদের পরিবারের সদস্যদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান সম্প্রচারমন্ত্রী।

ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দে বলেন, ‘বিশ্বে আজ বাংলাদেশের মানুষ বুক টান করে হাঁটে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ফলে দুই দেশের শত্রুরা কখনো সফল হতে পারবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতার বছর একাত্তর সালেই আমার জন্ম। সে কারণে বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গে আমার জন্মের একটা ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে এবং মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম বিদেশ সফর হবে বাংলাদেশে। ’

আলোচনা শেষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর জীবনভিত্তিক ‘শেখ হাসিনা : আ ডটার’স টেল’ প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হয় এবং বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পীরা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

এর আগে সকালে ড. হাছান মাহমুদ ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে তার সাথে বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সংস্কৃতি ও বাণিজ্য সম্পর্ককে আরো এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেন। এ সময় ত্রিপুরা রাজ্যের উন্নয়ন এবং বাংলাদেশ-ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর নানা উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। বৃহস্পতিবার তথ্যমন্ত্রী গুয়াহাটিতে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন করবেন।

আগরতলা ও গুয়াহাটি দুই শহরে দ্বিতীয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বোধন ছাড়াও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারত সফরে আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সাথে বৈঠক, গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে বঙ্গবন্ধু কেন্দ্র ও আসাম নেপাল মন্দিরে ইন্দো-বাংলা জামদানি প্রদর্শনী কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রীর ঢাকা ফেরার কথা রয়েছে।

সূত্র : বাসস

এএ