দুবাই-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করবে এফবিসিসিআই
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২২-০২-২৬ ১৮:৪৫:২৯
মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার ব্যবসায় যোগাযোগের কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিচিত সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই। ইউরোপের সঙ্গে বন্দর ও বিপণন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে দুবাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠছে। তাই দুবাইতে ইউএই ও বাংলাদেশ যৌথ বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছে এফবিসিসিআই।
শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) এক প্রস্তুতিমূলক সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের খাত ভিত্তিক বিনিয়োগ ও রপ্তানি সম্ভাবনাগুলো তুলে ধরা হবে।
জানানো হয়, আগামী মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দুবাই সফরকালীন এ কাউন্সিলের উদ্বোধন করা হবে। কাউন্সিলের কো-চেয়ারম্যান হিসেবে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করবেন এফবিসিসিআই ও ফেডারেশন অব ইউএই চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দুই সভাপতি।
সভায় এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ফেডারেশন অব ইউএই চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকার রপ্তানিবাজার ধরা সহজ হবে। ইউরোপের সঙ্গেও ব্যবসায় যোগাযোগ বাড়বে। এফবিসিসিআইয়ের এ উদ্যোগ এলডিসি পরবর্তীতে বাংলাদেশের জন্য নতুন বাজার উন্মোচনের সুযোগ তৈরি করবে বলে মনে করেন সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
কাউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে দেওয়া উপস্থাপনায় বিনিয়োগের জন্য পাঁচটি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন ফরেইন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ফিকির সভাপতি নাসের ইজাজ বিজয়। খাতগুলো হলো কৃষি ও হালাল খাদ্যপণ্য, হালকা প্রকৌশলী বিশেষ করে গাড়ির যন্ত্রাংশ, ব্যাংক ও বিমা, পেট্রোকেমিক্যাল ও বন্দর ব্যবস্থাপনা।
এছাড়া আইসিটি, আইটিইএস, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, প্রাইভেট ইক্যুইটি, অ্যাভিয়েশন, শিপিং ও ভ্যালু অ্যাডেড অ্যাগ্রো সার্ভিসখাতে দুবাইয়ের বিনিয়োগ আকর্ষণ করার কথা বলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ উইংয়ের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মুনতাসীর মামুন।
অন্যদিকে এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক আবুল কাশেম খান পর্যটন সেবা খাতে ও বেসরকারি বন্দর খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা তুলে ধরার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে দুবাইতে বাংলাদেশিদের বিনিয়োগ করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বৈঠকে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ও এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাত অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বৈশ্বিক অংশীদার খুঁজছে। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সই করেছে দেশটি। বাংলাদেশের ও দুবাইয়ের সঙ্গে এফটিএ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা শাইখ সিরাজ জানান, দুবাইতে বাংলাদেশি সবজি ও বীজের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে নার্সারি ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ খাতে দুইদেশের যৌথ উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। দক্ষ মানবসম্পদ ও খাদ্যের হালাল সনদ পাওয়ার ক্ষেত্রেও দুইদেশের একসঙ্গে কাজ করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের আরেক প্যানেল উপদেষ্টা ও বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. কাজী ইকবাল বলেন, বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উন্নয়নে যৌথ বিজনেস কাউন্সিলকে কাজে লাগাতে হবে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের উন্নয়নের পটভূমি পরিবর্তন হয়েছে। শুধু তৈরি পোশাক ও প্রবাসী আয়ের ওপর এখন আর বাংলাদেশের উন্নয়ন নির্ভরশীল নয়। এদেশে ইলেকট্রনিকস, প্লাস্টিকসহ অসংখ্য খাতে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি হয়েছে। বৈশ্বিক উদ্যোক্তাদের এসব বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে বাংলাদেশকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার ব্যাপারে জোর দেন তিনি।
দুবাইয়ের এসএমই পণ্যের বাজার ধরতে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরির প্রস্তাব দেন এফবিসিসিআইয়ের আরেক প্যানেল উপদেষ্টা ড. মোস্তফা আবিদ খান।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি মো. হাবীব উল্লাহ ডন, এম. এ. রাজ্জাক খান রাজ, পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবীর ও ড. নাদিয়া বিনতে আমীন, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি রিজওয়ান রহমান, বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ ও মহাসচিব মো. মাহফুজুল হক।
এএ