সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধসহ বিডিএফ’র ৭ দফা দাবি

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২২-০২-২৭ ১৭:০১:১৪


দেশের খামারিদের টিকিয়ে রাখার স্বার্থে সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধ করা, মাংস আমদানি বন্ধ করা ও তরল দুধের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ এবং বাজারজাত নিশ্চিত করাসহ সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএ)।

আজ রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‌‘সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধ এবং পশুখাদ্যের মূল্যের ঊর্ধগতি নিয়ন্ত্রণ’ শীর্ষক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানান সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন।

এ সময় উপস্থিত ছেলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান, সিনিয়র সহসভাপতি নাইব উল্লাহ, সহসভাপতি আলী আজম রহমান শিবলী, অর্থ সম্পাদক জাফর আহমেদ পাটোয়ারীসহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতৃস্থানীয় খামারিরা।

এই সম্মেলনে সভাপতি বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের ফিডমিলগুলোর চাহিদা মেটাতে ‘সয়াবিন মিল’ দেশীয় সয়াবিন তৈল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ছাড়াও ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়।

আমাদের দেশে ‘সয়াবিন মিল’-এর মোট চাহিদা বছরে ১৮ থেকে ২০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে ৭৫ থেকে ৮০ ভাগ দেশীয় সয়াবিন তৈল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান থেকে এবং অবশিষ্ট ২০ থেকে ২৫ ভাগ আমদানি করা হয়। ”

তিনি বলেন, সয়াবিন মিল রপ্তানি হবে, এমন খবরে স্থানীয় সয়াবিন মিল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সয়াবিন মিলের দাম দফায় দফায় কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা বৃদ্ধি করেছে। ফলে পশুখাদ্যের মধ্যে শুধু সয়াবিন মিল নয় অন্যান্য সব পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু সয়াবিন মিল রপ্তানির কারণে গত তিন মাসে পশুখাদ্যের মূল্য ২০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাবে আজ মাংসের দামের ঊর্ধ্বগতি এবং দুগ্ধ খামারিদের উৎপাদন খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০-৫০ টাকা।

মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, ‘বিগত ১০ বছরে মুদ্রাস্ফীতি ৮ শতাংশ বৃদ্ধি হলেও খামারিদের তরল দুধের দাম বাড়েনি এক টাকাও। মিল্ক ভিটা প্রতিষ্ঠানসহ দেশের অন্যান্য প্রাইভেট সংস্থা ৩২-৪২ টাকায় লিটারপ্রতি দুধ সংগ্রহ করে থাকে। অথচ এলাকাভেদে দুধের উৎপাদন খরচই হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। এমতাবস্থায় সরকার থেকে খামারিদের তরল দুধের মূল্যের ওপর ভর্তুকি অথবা ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করার আকুল আবেদন করছি। ’

সংগঠনটির সভাপতি আরো বলেন, ‘বিগত দুই বছরে দফায় দফায় গমের ভুষি ৮৫০ টাকা থেকে ১৪৫০ টাকা হয়েছে, কুড়া ৩৫০ টাকা থেকে ৮৫০ টাকা, বুট ভুষি ১১০০ টাকা থেকে ১৪০০ টাকা, ডাবলি ভুষি ৬০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা ও মসুরি ভুষি ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা হয়েছে। পশুখাদ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে উপজেলা পর্যায়ে টিসিবির মাধ্যমে পশুখাদ্য পৌঁছে দিতে হবে। ’

বিডিএফএর পক্ষ থেকে জানানো দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- ১. সয়াবিন মিল রপ্তানি বন্ধ করতে হবে। ২. খামার ও খুচরা পর্যায় তরল দুধের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ এবং বাজারজাত নিশ্চিত করতে হবে। ৩. হিমায়িত মহিষের মাংস আমদানি বন্ধ করতে হবে। ৪. টিসিবির মাধ্যমে পশুখাদ্য পৌঁছে দিতে হবে। ৫. পশুখাদ্যের ব্যাবসায়িক সিন্ডিকেট বন্ধ করে কঠোর নজরদারির আওতায় আনতে হবে। ৬. জরুরি শিশুখাদ্য নয় বরং বাল্ক ফিল্ড মিল্ক নামে নিম্নমানের গুঁড়া দুধ আমদানি বন্ধ করে দেশীয় শিল্পের দিকে নজর দিতে হবে। ৭. দুগ্ধ ও মাংস খামারের বিদ্যুৎ ও পানির বিল বাণিজ্যিক বিলের আওতায় থাকার কারণে দুগ্ধ ও মাংসের উৎপাদন খরচ অত্যধিক। বিদ্যুৎ ও পানির বিল কৃষির আওতায় আনতে হবে।

সানবিডি/এনজে