যেভাবে রক্ষা পেল ‘ডাইনি’ শিশু

প্রকাশ: ২০১৬-০২-১৬ ১২:৫৩:০১


Dainy Chieldদু বছরের শিশুটিকে অভুক্ত ও উলঙ্গ অবস্থায় নাইজেরিয়ার এক রাস্তা থেকে উদ্ধার করেছিলেন ডেনিস নারী আনজা রিংগ্রেন লোভেন। এটি কোনো পথশিশু নয়। তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং তারই বাবা-মা। তাদের দৃষ্টিতে সে ছিল ‘ডাইনী’ বা অপয়া।

উদ্ধারের পর লোভেন তার নাম দিয়েছেন ‘হোপ’ বা আশা। কিন্তু উদ্ধার হওয়ার আগে দীর্ঘ আট মাস ধরে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেরিয়েছে সবে হাঁটতে শেখা শিশুটি। তখন দয়া করে কোনো পথচারীর ছুঁড়ে দেয়া খাবারই ছিল তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। তাইতো উদোম গায়ে পুষ্টি বলতে কিছুই ছিল না তার। ক্রিমি ভর্তি উদোরটি কেবল নজরে পড়ত তখন। এ অবস্থায় তাকে দেখতে পান ডেনমার্কের ওই নারীটি। তিনি ক্ষুধার্ত শিশুটির মুখে তুলে দেন খাবার ও পানি। কম্বল দিয়ে ঢেকে দেন তার উলঙ্গ শরীর। তাকে কোলে তুলে ছুটে যান পাশের এক হাসপাতালে।

আফ্রিকায় একটি দাতব্য সংস্থার প্রতিষ্টাতা লোভেন। ‘African Children’s Aid Education and Development Foundation’ নামের ওই সংস্থাটির মূল কাজ হচ্ছে আফ্রিকার পরিত্যক্ত শিশুদের সহায়তা করা। বিশেষ করে যাদের পরিবার ‘ডাইনি’ বলে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। শুধু কি বের করে দেয়া। অনেক শিশুকে তো এই অপবাদে হত্যা পর্যন্ত করা হয়ে থাকে। এইসব শিশুদের খাদ্য, পোশাক ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন লোভেন। হোপকেও তিনি সেবা শুশ্রষা দিয়ে সারিয়ে তুলেছেন। এ সম্পর্কে নিজের ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,‘হোপের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। সে এখন নিজেই খাবার চেয়ে খাচ্ছে। চিকিৎসাতেও সাড়া দিতে শুরু করেছে সে।’ হোপকে তিনি ‘শক্তিশালী ক্ষুঁদে বালক’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।

হোপের চিকিৎসার জন্য দু দিন আগে তিনি বিশ্ব জুড়ে যে সহায়তার আবেদন করেছিলেন তাতেও বেশ সাড়া পেয়েছেন। ইতিমধ্যে ১০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা পেয়েছেন। এ অর্থ তিনি হোপের চিকিৎসা খরচ মেটাবেন। পাশাপাশি এ ধরনের পরিত্যক্ত শিশুদের জন্য একটি পৃথক হাসপাতাল করারও ইচ্ছা আছে তার।

আফ্রিকার দেশগুলোতে এরকম হোপ একজন নয় অসংখ্য। কুসংস্কারে আচ্ছন্ন এসব দেশগুলোতে হাজার হাজার শিশুদের ‘ডাইনি’ আখ্যা দেয়া হয়ে থাকে। এসব শিশুদের ওপর চলে নানা  নির্যাতন। হোপের মতই শিশুদের পরিবারগুলো তাদের ত্যাগ করে। অনেককে তো মেরে ফেলা হয়।

সানবিডি/ঢাকা/এসএস