পরিবারকে ‘৩০ লাখ’ টাকা দেয়ার নির্দেশ
আপডেট: ২০১৬-০২-১৯ ২৩:৫৯:০৫
রাজধানীর শাজাহানপুরে পাইপে পড়ে নিহত শিশু জিহাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে, তবে ধারণা করা হচ্ছে ৩০ লাখ টাকার মতো ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা আসতে পারে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে এই রায় দেন।
এর আগে গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি এই ক্ষতিপূরণের জন্য একটি রিট শুনানি হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট জিহাদের পরিবারকে ৩০ লাখ টাকা কেন ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়া হবেনা সে বিষয়ে রুল জারি করেন।
রায় ঘোষণার পর চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে রিটকারী সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বাংলামেইলকে বলেন, ‘আদালত তার রায়ে শিশুটির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণ ৩০ লাখ টাকা বা তার বেশি কমও হতে পারে। এটি পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি বের হলে বোঝা যাবে। পাশাপাশি কে কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে তাও রায়ে লেখা থাকবে। অর্থাৎ ফায়ার সার্ভিস, সরকার, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ কত টাকা ক্ষতিপূরণ দিবে তার পরিমাণ চূড়ান্ত রায়ে উল্লেখ থাকবে।’
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে রাজধানীর শাজাহানপুরে বাসার কাছে রেলওয়ে মাঠের পাম্পের পাইপে পড়ে যায় জিহাদ। প্রায় ২৩ ঘণ্টা পর ২৭ ডিসেম্বর বিকেল তিনটার দিকে জিহাদকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এরপর ২৮ ডিসেম্বর জিহাদের পরিবারের জন্য ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে চিল্ড্রেন চ্যারিটি বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন।
একই দিন জিহাদকে জীবিত উদ্ধারে সরকারি সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা তদন্তে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে অন্য একটি রিট আবেদন দায়ের করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাইনুল হক।
রিট আবেদনে তদন্ত কমিটিতে জিহাদের মরদেহ উদ্ধারকারী স্বেচ্ছাসেবীদের অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করা হয়। আর এ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জিহাদকে উদ্ধারে গাফিলতিতে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়।
জিহাদকে উদ্ধারকারী ৫ যুবককে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করতেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও গত দুই বছরে ফায়ার সার্ভিস সিভিল ডিফেন্স কী কী আধুনিক যন্ত্রপাতি ক্রয় করেছে, তার একটি তালিকা আদালতে দাখিলের জন্য নির্দেশনা চাওয়া হয়।
অন্যদিকে রিট আবেদনে জিহাদের বাবাকে ১২ ঘণ্টা পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ঘটনায় দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজি ও ডিএমপি কমিশনারকে নির্দেশ দিতে আদালতের প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়।
এছাড়া রাজধানীর যেসব এলাকায় ম্যানহোলের ঢাকনা নেই, সেগুলো দ্রুত স্থাপনের জন্য ডিসিসি ও ওয়াসাকে নির্দেশ দিতে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।