প্রয়োজনে বাবার মতো জীবন দিতে প্রস্তুত: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৪-০১ ১১:৪২:৩৪
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করতে প্রয়োজনে বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত। আমি কক্সবাজারবাসী এবং সমগ্র বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে প্রয়োজনে আমি আমার বাবার মতো জীবন উৎসর্গ করব। সব বাধা অতিক্রম করে দেশবাসীর জন্য একটি সুন্দর ও উন্নত জীবনের ব্যবস্থা করে যাব। খবর বাসসের।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) কক্সবাজারে অনুষ্ঠিত ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার : বদলে যাও কক্সবাজার’ কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের আনুষ্ঠানিক উদযাপনের অংশ হিসেবে কক্সবাজারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকারের অক্লান্ত পরিশ্রমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার ফলে দেশে-বিদেশে বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়াবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার ওপর আপনাদের আস্থা ও বিশ্বাস না থাকলে এ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হতো না। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস হচ্ছে তাদের কল্যাণে কাজ করার জন্য সরকারের চালিকাশক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের দিক থেকে এমন অবস্থানে পৌঁছেছে যে, এ দেশকে কেউ পিছনে ঠেলে দিতে পারবে না।
তিনি আরো বলেন, এখন, আমরা একটি উন্নয়নশীল জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি এবং তা বজায় রেখে আমাদেরকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তুলতে হবে।”
বাংলাদেশ ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে স্বীকৃতি লাভের জন্য জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে।
রবার্ট ফ্রস্টের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সাক্ষাৎকারের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তার বাবা বাংলাদেশের মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফ্রস্ট বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, তার দুর্বলতা কী, উত্তরে জাতির পিতা বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশের মানুষকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন।
তিনি আরো বলেন, “বঙ্গবন্ধু যাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতেন সেই দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তার পাওয়ার কিছু নেই বরং দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটানোই তার জন্য সবচেয়ে বেশী মূল্যবান।
তার সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করেছে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, এখন তার অগ্রাধিকার হচ্ছে প্রতিটি ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষকে বিদ্যুৎ দেয়া।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তার পিতা বঙ্গবন্ধু তার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন মানুষের কল্যাণে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাকে তার জীবনে অনেক বাধা এবং আক্রমণের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জনগণের উন্নতির জন্য কিছু করার কাজে তাকে কিছু কিছুই বাধা দিতে পারে না।
কক্সবাজারে বাস্তবায়িত বিশাল উন্নয়ন কাজের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিমানবন্দর, মেরিন ড্রাইভ, সড়ক ও রেল অবকাঠামো নির্মাণ। ক্রীড়া কমপ্লেক্স ও একটি ফুটবল একাডেমি নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে এবং প্রতিটি এলাকাকে উন্নয়নের আওতায় আনা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার বিমানবন্দর বাংলাদেশের সেরা বিমানবন্দর এবং পূর্ব ও পশ্চিমের রিফিলিং হাব হিসেবে পরিণত হবে ।
তিনি বলেন, তার সরকার শুধু কক্সবাজারের উন্নয়নে কাজ করছে না, বরং সারাদেশে উন্নয়ন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করে ভারত ও মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা জিতে বিশাল সমুদ্র এলাকা ও সামুদ্রিক সম্পদের ওপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে।