বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২২-০৪-০৬ ১১:৩৭:০৩


যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ৯ বিলিয়ন ডলার। এই সংখ্যাটি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের একক বৃহত্তম বিদেশি ক্রেতা।

সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে দূতাবাসে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন।

এ সময় পররাষ্ট্র্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি শক্তিশালী ও চিরবিকাশমান বন্ধুত্ব তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যখন দুই দেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন করছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে, নিশ্চিত করতে চাই, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তার অংশীদারত্বকে গভীরভাবে মূল্য দেয়।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালের অক্টোবরে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেই সফরের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উষ্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। তারপর থেকেই, আমরা দ্বিপাক্ষিক ও বৈশ্বিকভাবে আমাদের অভিন্ন বৈদেশিক নীতির লক্ষ্য অনুসরণে একটি ক্রমপ্রসারমান সহযোগিতার আওতায় একত্রিত হয়েছি।

‘দুই দেশের মধ্যে সরকারি পর্যায়ের কর্মকান্ডের পাশাপাশি, উভয় দেশের জনগণের মধ্যে ক্রমবর্ধমান যোগাযোগ আর সেই সঙ্গে, বিভিন্ন সংস্থার মধ্যেকার পারস্পরিক সংযোগ দুই দেশের সার্বিক যোগাযোগ বৃদ্ধির পরিপূরক হয়েছে। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা উল্লেখযোগ্যসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশিও দুই দেশের মধ্যে একটি অপরিহার্য সেতু। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আগামী ৫০ বছরে এই বন্ধনগুলো বাড়তেই থাকবে।’

আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ-মার্কিন অর্থনৈতিক সম্পর্ক সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। বাংলাদেশ দেখতে চায় যে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র আইসিটি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির মতো অন্যান্য খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে তার বিনিয়োগকে বৈচিত্র্যমুখী করুক।

‘আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও জনগণের মধ্যে সম্পর্ককে সহজতর করার জন্য একটি কার্যকর প্ল্যাটফর্ম হবে। একাধিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও, বাংলাদেশ একটি বহুত্ববাদী গণতন্ত্র হিসেবে রয়ে গেছে। বাংলাদেশের মূল সম্পদ হলো জনগণ, কারণ দেশটি সাংবিধানিকভাবে জনগণেরসব ধরনের নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো-টলারেন্স নীতি অনুসরণ করি। নারীর ক্ষমতায়ন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও মত প্রকাশের স্বাধীনতায় প্রশংসনীয় সাফল্যের জন্য বাংলাদেশকে একটি মধ্যপন্থী মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।

আমরা মনে করি, রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আরও অনেক কিছু করতে পারে। বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী মার্কিন ভ্যাকসিনের বৃহত্তম প্রাপক হওয়ায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াশিংটনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশকে ৬ কোটি ১০ লাখের বেশি ডোজ কোভিড টিকা দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ইউএসএআইডি’র উপ-প্রশাসক ইসোবেল কোলম্যান। স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহীদুল ইসলাম।

এ সময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ, নাইম রাজ্জাক এমপি, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সূত্র: বাসস