‘না খেয়ে কেউ মারা গেছে প্রমাণ দিতে পারলে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব’
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৪-০৭ ১৪:১৯:১১
কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ১৯৭১ সনে আমাদের গড় জমি ছিলো ২৮ শতাংশ, এখন তা দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। আগে খাদ্য ঘাটতি ছিল। এখন দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই। এসব সম্ভব হয়েছে আমাদের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে নতুন নতুন ধানের জাত উদ্ভাবন করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাগ-বানিয়াজুরী এলাকায় ব্রি ধান ৯২ জাতের বীজ উৎপাদনকারী কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির শাসনামলে তারেক জিয়া ও খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল। ২০০৩ ও ৪ সালে শত শত মানুষ না খেয়ে মারা গেছে মঙ্গার কারণে। আর বর্তমান সরকারের আমলে একজন মানুষ না খেয়ে মারা গেছে, যদি কেউ প্রমাণ দিতে পারে, তাহলে আমি কৃষি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেব।
তিনি আরও বলেন, আমরা যদি কৃষির উন্নয়ন করতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হবে। কারণ কৃষির উপর দাঁড়িয়ে সকল উন্নয়ন হবে। আমাদের ছেলে মেয়েরা চাকরি-বাকরি করবে, তাদের জীবনে এতো কষ্ট করতে হবে না।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বোরো আমাদের মূল ফসল। আমাদের মূল খাদ্য চাল। এই চালের বেশি উৎপাদন হয় বোরো থেকে। প্রায় ২ কোটি টনের মতো বোরো আমরা উৎপাদন করি। আমরা অনেকগুলো নতুন জাত উদ্ভাবন করেছি। যেগুলোর উৎপাদনশীলতা আগের অন্য জাতের চেয়ে অনেক বেশি। আমরা চাচ্ছি এসব জাত যত দ্রুত মাঠে নেওয়া যাবে ততই আমরা লাভবান হব। এই ব্রি-ধান ৯২ প্রতি শতকে ১ মণ করে ধান হয়। আগে যেখানে বিঘাতে ৫/৭ মণ ধান হতো এখন এই নতুন জাতে প্রায় ৩৩ মণের মতো ধান পাবে কৃষক ভাইয়েরা।
কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশে যদি কৃষি না হয়, তাহলে দেশ টিকে থাকবে না। এই যে ইউক্রেনে যুদ্ধ হইতেছে, ইউক্রেন থেকে এখন আর গম আসতেছে না। তারাই গম সরবরাহ করে। রাশিয়া থেকে গম আসতেছে না। ইতিমধ্যে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষের হাতছানি। কাজেই কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকতে হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভোজ্যতেলে; প্রতি বছর ২৪ হাজার কোটি টাকা আমাদের খরচ করতে হয় শুধু তেল আমদানি করার জন্য। এই ইউক্রেনের যুদ্ধ আর করোনার কারণে তেলের দাম এখন বেশি। কারণ বিদেশ থেকে এখন তেল আসতেছে না। যে তেল ছিল ৬০০ ডলার টন, সেই তেল এখন ২ হাজার টন হয়েছে। শিপ ও জাহাজের ভাড়া বাড়ছে।
আলোচনা সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. বেনজীর আলম, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির ,জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার গোলাম আজাদ খাঁন , জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভা শেষে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে পেঁপে গাছের চারা বিতরণ করা হয়।