ফ্রান্সের চাপেই কাতারে বিশ্বকাপ
আপডেট: ২০১৬-০২-২০ ১১:১৪:০৮
২০১৫ সালটি ছিল ফিফার জন্য একটি কেলেঙ্কারির বছর। বছরের শুরুতে টানা পঞ্চমবারের মতো ফিফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সেপ ব্লাটার। কিন্তু রাশিয়ায় ২০১৮ এবং কাতারে ২০২২ সালে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হওয়া নিয়ে দুর্নীতি এবং ফিফার অন্যান্য কর্মকাণ্ডে দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার বেশ কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটক করে সুইস পুলিশ। এ দুর্নীতির সঙ্গে ফিফাপ্রধান সেপ ব্লাটারও সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ উঠে। এ অভিযোগের পর ফিফা প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরে দাঁড়ান সেপ ব্লাটার। নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি ফিফা থেকে সরে যাবেন বলে ঘোষণা দেন। দুর্নীতির সেই তালিকায় নাম লেখান মিশেল প্লাতিনিও। দু’জনই রয়েছেন নিষেধাজ্ঞার কবলে।
সেখানে একটি বড় ইস্যু ছিল, ২০০২ সালে কাতারে বিশ্বকাপ হওয়ার নেপথ্যে কোনো কেলেঙ্কারি লুকায়িত ছিল কিনা? সম্প্রতি এ বিষয়ে মুখ খুললেন সাবেক ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার। জানালেন, ফ্রান্সের চাপেই নাকি কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। যেখানে ২০২২ সালের বিশ্বকাপ হওয়ার কথা ছিল যুক্তরাষ্ট্রে। কী এমন চাপ ছিল যে বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি আমেরিকাকে সরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটিতেই বিশ্বকাপের আয়োজন বানাতে হবে?
টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্ল্যাটার জানান, গত ফিফা নির্বাচনের এক সপ্তাহ কি দশ দিন আগে কাতারে বিশ্বকাপ আয়োজন করতে ফ্রান্সের পক্ষ থেকে চাপ প্রয়োগ করা হয়! কেননা ফ্রান্স চায়নি যে ২০২২ সালে আমেরিকাতে বিশ্বকাপ হোক। এই সিদ্ধান্তের পেছনে ব্ল্যাটারের ভোটের লোভ কাজ করেছে, এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এর নেপথ্যের খলনায়কের ভূমিকা পালন করেন তৎকালীন উয়েফা সভাপতি মিশেল প্লাতিনি।
ফোনের মাধ্যমে কাতারে বিশ্বকাপের প্রস্তাবটি নাকি প্লাতিনিই প্রথম ফিফা সভাপতির কানে পৌঁছান। ব্ল্যাটারের ভাষায়, ‘আপনি একটি বিশ্বকাপকে কিনতে পারেন না। তার পরও সিদ্ধান্তের শেষটাতে রাজনৈতিক প্রভাব তো থাকেই। ২০২২ সালে বিশ্বকাপের জন্য প্লাতিনি আমাকে ফোন দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, ‘‘আমরা দেশের (ফ্রান্স) প্রধানের (নিকোলাস সারকাজি) সঙ্গে সভা রয়েছে। তিনি আমাকে বলবেন, ফ্রান্সের ভোট কোথায় যাবে। তার পরেই আমি সিদ্ধান্ত নেব। তবে এটাও সত্য যে, এর আগে তিনি (সারকাজি) আমাকে ফোনে জানান আমার ভোট যেন আমেরিকার পক্ষে না যায়।’
ফিফা সভাপতি নির্বাচনে মিশেল প্লাতিনির একটা প্রভাব ছিল। যার গুটি চালেন ফ্রান্সের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকাজি। ব্ল্যাটার জানান, ‘ফ্রান্স তার নিজের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে। আমি জানতাম এটা একটা বড় সমস্যা ডেকে আনতে পারে। আমরা চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সিদ্ধান্ত নিতে অনেকটা দেরি হয়ে গেছে। এটা ফিফা নির্বাচর্নের এক সপ্তাহ কিংবা ১০ দিন আগের ঘটনা।’