ধামরাইয়ে ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ৪ মামলা
প্রকাশ: ২০১৬-০২-২০ ১২:১৪:১৮
ঢাকার ধামরাইয়ের কোর্ট পাড়ার বহুতল ভবন রিয়াজ প্লাজায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
র্যাব-৪ এর ডিএডি মো. বখতিয়ার রহমান বাদী হয়ে শুক্রবার রাতে ধামরাই থানায় ডাকাতির চেষ্টা, অস্ত্র, মাদক ও অপমৃত্যু মামলাসহ পৃথক ৪টি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় আসামি করা হয়েছে ডাকাতদলের ৬ সদস্যের মধ্যে ৫ সদস্যকে। অপ্রাপ্ত বয়সের কারণে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে শিশুটি মামলার আসামি থেকে বাদ পড়েছে। এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত হয়েছেন ধামরাই থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক(এসআই) মো. নিজামউদ্দিন দেওয়ান।
শনিবার ডাকাতদলের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ১০দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তিন মাস আগে ডাকাতদলের সক্রিয় সদস্য বাদশা মিয়া নিজেকে মাইনুদ্দিন পরিচয় দিয়ে কোর্টপাড়ার রিয়াজ প্লাজার দ্বিতীয় তলায় সোনালী ব্যাংকের ভল্টের ওপরে একটি ফ্লাট ভাড়া নেয়।
ঢাকার কদম তলীর লিটনের স্ত্রী রোমানা আক্তার(২৪), দক্ষিণখানের মেহেদি হাসানের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী শীলা আক্তার(২২), শিশু সাকিব হাসানকে (৯) তিনি স্ত্রী সন্তান পরিচয়ে ৭ সদস্যের পরিবার সাজিয়ে ২ মাস আগে ওই ফ্লাটে উঠেন। এরপর ওই ডাকাতদলের সদস্যরা শোয়ার রোমের ফ্লোরের একটি বড় টাইলস খুলে রাতে অত্যাধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে দ্বিতীয় তলার সোনালী ব্যাংকের ভল্টের ওপরের ছাদ কেটে সুরঙ্গ বানাতে থাকেন। দিনের বেলায় ফ্লোরে কার্পেট বিছিয়ে রাখেন যেন কেউ বুঝতে না পারে।
এদিকে ছাঁদ কাটা কংক্রিট বাজারের ব্যাগে করে নিয়ে দূরে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়ে ওই ব্যাগে বাজার করে বাসায় ঢুকেন বাদশা। সর্বশেষ তারা শুক্রবার, শনিবার ও রোববারের তিনদিনের ছুটির সুযোগটি কাজে লাগাতে বৃহস্পতিবার রাতে ওই ছাদ কাটা শুরু করেন। আর এজন্য ব্যবহার করে বিদেশী অত্যাধুনিক কাটার, ব্লেড, স্যান, গ্রিললগ, ড্রিলসহ বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জামাদি। বিষয়টি র্যব-৪ এর সদস্যরা জানতে পেরে রাতে ওই ভবনে অভিযান চালালে বন্দুকযুদ্ধের পর ডাকাত সর্দার মাসুক নিহত হন। এসময় নারি ও পুরুষসহ আটক হয় ডাকাতদলের সক্রিয় ৬সদস্য। এরমধ্যে একজন শিশু ছিল। এব্যাপারে ধামরাই থানায় পৃথক ৪টি মামলা দায়েরে পর ধৃত ডাকাতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে প্রেরণ করে ১০দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করা হয়।
এব্যাপারে র্যাব- ৪ এর সাভারের নবীনগর ইউনিটের কমান্ডার মেজর মো. মাসুদুর রহমান বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় জামিন প্রাপ্তদের তালিকা নিয়ে র্যাবের গোয়েন্দা সদস্যরা তাদের অবস্থান নির্ণয় করেই ব্যাংক ডাকাতির পূর্বেই তথ্য জেনে যায়। আর এ তথ্যের ওপর নির্ভর করেই বৃহস্পতিবার দিনগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে কোর্টপাড়ার রিয়াজ প্লাজার সোনালী ব্যাংকের ভল্টের ওপরে তৃতীয় তলায় ডাকাতদ সদস্যের ভাড়া করা ফ্লাটে অভিযান চালানো হয়। এসময় দুই পক্ষের গুলিবিনিময়কালে ডাকাত সর্দার মাসুক আহাম্মেদ নিহত হয়। আটক হয় সবুজ মিয়া, রিয়াজুল ইসলাম, বাদশা মিয়া, রোমানা আক্তার, শীলা আক্তার ও ৯বছরের শিশু সাকিব হাসানসহ ডাকাতদলের ৬সদস্য। এসময় জব্দ করা হয়েছে একটি নাইন এমএম রিভলবার, ৪ রাউন্ড গুলি,অসংখ্য ইয়াবা ট্যাবলেট, বিদেশী বড় একটি কাটার মেশিন, দুইটি গ্রিললগ, দুইটি ড্রিল, ৬টি লোহার পাইপ, ৪টি বাংলা কাটার, নানা ধরণের স্ক্রু ড্রাইভার, সেলাই রেঞ্জ ও ফ্লাটভারসহ কংক্রিট ও লোহার রড কাটার বিভিন্ন ধরণের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি। এদের বিরুদ্ধে র্যাবের ডিএডি বখতিয়ার রহমান বাদী হয়ে ধামরাই থানায় ৪টি মামলা দায়ের করেছেন।
এব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধামরাই থানার এসআই মো. নিজামউদ্দিন দেওয়ান বলেন, তদন্ত শেষে ডাকাতির চেষ্টা ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটিত হবে।
এব্যাপারে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ রিজাউল হক দীপু বলেন, মামলা দায়ের হয়েছে। এসআই নিজামউদ্দিন দেওয়ান মামলার তদন্ত করছেন। তদন্তের পর প্রকৃত ঘটনা উন্মোচিত হবে।