এটিএম জালিয়াতিতে জড়িত বিদেশিসহ গ্রেফতার ৪
প্রকাশ: ২০১৬-০২-২২ ১৪:৫৭:৩২
এটিএম বুথে কার্ড জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মূলহোতা বিদেশি নাগরিক টমাস পিটার ও তার এ দেশীয় তিন এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা হলেন- মোরশেদ আলম মাকসুদ, রেজাউল করিম ও রিয়াজ। আজ সোমবার এদেরকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়া হবে বলে ডিবি পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
মিন্টো রোডে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম বলেন, রোববার রাতে টমাস পিটারকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই ঘটনায় তিন ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। পিটার জার্মানির নাগরিক হলেও মূলত তার কাছে থেকে একটি পোল্যান্ডের পাসপোর্ট পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় একাধিক দেশের পাসপোর্ট ব্যবহার করেন বলে জানা গেছে।
পিটার ও তার তিন সহযোগী রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তিনটি ব্যাংকের চারটি এটিএম বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে গ্রাহকের তথ্য চুরি করেন। বেসরকারি ইস্টার্ন ব্যাংকের গুলশানে দুটি, ইউসিবির বনানীর একটি এবং সিটি ব্যাংকের মিরপুরের কালশী এলাকার একটি বুথে বিশেষ যন্ত্র বসিয়ে তারা জালিয়াতি করে আসছিলেন। এটিএম বুথে জালিয়াতির ঘটনায় সিসি ক্যামেরায় পাওয়া ছবি দেখে বিদেশি ওই নাগরিককে শনাক্ত করা হয়। এ ছাড়া আরো কয়েকজন বিদেশি নজরদারিতে আছেন, যারা এ ধরনের কাজে জড়িত।
ডিআইজি মনিরুল আরো বলেন, টমাস পিটার নিজেকে ইউক্রেনের নাগরিক বলেও পরিচয় দেন। তবে পিটার পোল্যান্ডের ভুয়া পাসপোর্ট নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছিলেন। তার কাছে জার্মান নাগরিকত্বের একটি কার্ডও পাওয়া গেছে। বাংলাদেশি তিনজনই সিটি ব্যাংকের আইটি শাখায় কর্মরত আছেন। বনানীর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) একটি বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসানোর সময় ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় ওই বিদেশির ছবি পাওয়া যায়। এরপর ভিডিওতে দেখা ব্যক্তির মতো চেহারার পাঁচ বিদেশির ওপর নজর রাখছিল পুলিশ। পরে আসল অপরাধীর বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ইউসিবি কর্তৃপক্ষ বনানী থানায় মামলা করে এজাহারের সঙ্গে সিসিটিভির ভিডিও জমা দেয়। ওই বিদেশি যেন বাংলাদেশ থেকে পালাতে না পারে, সেজন্য বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরগুলোতে নজরদারি চালাতে অনুরোধ করা হয়। এটিএম বুথে স্কিমিং ডিভাইস বসিয়ে ওই তথ্য ব্যবহার করে ‘ক্লোন’ এটিএম কার্ড তৈরির মাধ্যমে গ্রাহকের অজান্তে জালিয়াতচক্র লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
ওই যন্ত্র বসানো অবস্থায় বুথগুলোতে ১২০০ কার্ড লেনদেন করা হয়। ৪০টি কার্ড ক্লোন করে গ্রাহকের প্রায় ২০ লাখ টাকা তুলে নেওয়ার তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে আছে। আর এটিএম কার্ড জালিয়াতির ঘটনায় সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষও পল্লবী থানায় একটি মামলা করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম শাখার প্রধান মারুফ হোসেন এ সময় বলেন, গ্রেফতারকৃতদের আদালতে নিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত বেরিয়ে আসবে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সানবিডি/ঢাকা/আহো