বাংলাদেশের সামনে এবার শ্রীলঙ্কা
প্রকাশ: ২০১৬-০২-২৮ ১২:০০:১৯
প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে হার। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে দাপুটে জয়। যাতে হারানো আত্ববিশ্বাস খুঁজে পেয়েছে মাশরাফি বিগ্রেড। এশিয়া কাপে আজ বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ গতবারের চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা।
টি২০ ক্রিকেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের রেকর্ড নেই স্বাগতিক বাংলাদেশের। ২০০৭ সাল থেকে ২০১৪ পর্যন্ত চারবার মুখোমুখি হয়েছে দল দুটি। প্রতিবারই হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টাইগাররা। তবে এবার ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছে মাশরাফি বাহিনী। কিন্তু শঙ্কা জাগছে দুর্বল ব্যাটিংলাইন। কোন পরীক্ষা-নিরীক্ষাতেও কাজ হচ্ছে না। আজ হবে কি?
বিশেষ করে আটোসাটো বোলিংয়ের পরও ম্যাচ হারতে হচ্ছে বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে। প্রত্যেক ম্যাচের আগে বাংলাদেশের চিন্তা যে এখানেই। এশিয়া কাপের শিরোপা লড়াইয়ে টিকে থাকতে হলে আজ শ্রীলংকার বিপক্ষে জিততে হবে স্বাগতিকদের। এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন লাসিথ মালিঙ্গার শ্রীলংকা। রোববার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়। ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে গাজী টিভি ও বিটিভি।
এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে হারের পর নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ওই জয়েও ব্যাটিংয়ে অতৃপ্তি রয়েই গেছে টাইগারদের। ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের বড় সমস্যা ১০ থেকে ১৫ ওভারে। এই সময়টায় কোনোভাবেই দ্রুত রান তুলতে পারছে না মাশরাফি বাহিনী। আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ১০ ওভারে ৭৪ রান তোলার পরও রানের চাকা সচল করতে পারেনি। এই পুঁচকেদের বিপক্ষেও মাত্র ১৩৩ রানে থামতে হয়। এরপরেও অবশ্য বোলারদের কল্যানে বড় জয়ই পায় মাশরাফি বাহিনী।
এদিকে এশিয়া কাপে শ্রীলংকার একমাত্র ম্যাচটিও ছিল আরব আমিরাতের বিপক্ষে। তারাও অবশ্য রানের জন্য লড়াই করেছে। এই দলের বিপক্ষেও তারা মাত্র করেছিল ১২৯ রান। হারতে হারতেই ১৪ রানে জিতে যায় শ্রীলঙ্কা।
সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষদুটি ম্যাচে হারের পর ভারতের বিপক্ষে হেরেছিল বাংলাদেশ। একটা জয় খুঁজছিল তখন স্বাগতিক শিবির। আরব আমিরাতের বিপক্ষে অবশ্য সেটা পেয়ে এর ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে প্রস্তুত সাব্বির-মুস্তাফিজরা।
শনিবার টি২০র সফল ব্যাটসম্যান সাব্বির রহমান রুম্মান বলেন, ‘প্রথম ম্যাচ হারের পর আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটা কমে গিয়েছিল। ছোট-বড় যাই হোক আমিরাতের সঙ্গে আমরা জিতে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। আমরা খুব ভালোভাবে জিতেছি বলে আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে গেছে।’ কিন্তু স্বাগতিক দলের ব্যাটিংয়ে সমস্যা থেকেই গেছে। তাই ব্যাটিং সমস্যা নিয়ে সাব্বির বলেন, ‘কেউ হয়তো ভালো করছে আবার হয়তো কেউ ক্লিক করতে পারছে না। ব্যাটিং নিয়ে আর কিছু আমি বলতে পারছি না।’
অপরদিকে লংকাদের এই দলে কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনের মতো বড়মানের ক্রিকেটার খুব কমই আছে। তবে সর্বশেষ বাংলাদেশ সফরে তারা টানা সফলতা পেয়েছিল।
আর তাই সাঙ্গা, মাহেলা ছাড়াও লংকাদের সমীহ করছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘টি২০তে আসলে জয়া-সাঙ্গার সময়ই শ্রীলংকার আরও অনেক ম্যাচ উইনার ছিল। এই দলেও আছে। দিলশান ফর্মে ফিরলে বিপজ্জনক, মালিঙ্গা প্রথম ম্যাচ জিতিয়েছে। পেরেরা-চান্ডিমালরা আছে। তাই টি২০তে যে কেউ ম্যাচ জেতাতে পারে।’
বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা বাংলাদেশে এসেছে আরও একটি শিরোপা জেতার লক্ষ্য নিয়ে। প্রথম ম্যাচে কষ্টের জয়ের পর নিজেদের অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছে তারা। তাই বলে বাংলাদেশকেও হালকাভাবে নিচ্ছে না লংকানরা। অধিনায়ক মালিঙ্গা বলেন, ‘আগামীকালের (আজ) ম্যাচটাও স্বাভাবিক একটা খেলা। ৫ দল এশিয়া কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং প্রতিটি দলই কঠিন। আমরা কোনো দলকেও হাল্কাভাবে দেখছি না। সবাই নিজেরা ম্যাচে কি করতে সক্ষম এবং কিভাবে নিজেদের সেরাটা দিতে পারে সেদিকে মনোযোগী। প্রতিপক্ষ নিয়ে আমরা তেমন কিছু ভাবছি না।’
বাংলাদেশের টুর্নামেন্টে টিকে থাকার লড়াই। অন্যদিকে স্বাগতিকদের হারিয়ে শিরোপা লড়াইয়ে একধাপ এগিয়ে যেতে চায় শ্রীলংকা। এবার দেখার বিষয়, মিরপুরে শেষ হাসি আজ কে হাসি, মালিঙ্গা না মাশরাফি শিবির?