চামড়ায় লবন যুক্ত করতে বাণিজ্যমন্ত্রীর আহবান
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৭-০৫ ২০:০৩:৩৪
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, কোরবানীর পশুর চামড়া যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য পশু কোরবাণীর পর নিজেদের প্রয়োজনীয় লবন যুক্ত করে সংরক্ষণ করতে হবে। কোরবাণীর সাতদিন পর্যন্ত ঢাকা অভিমুখে এবং আন্তজেলা কোন চামড়াবাহী যানবাহন চলাচল করতে পারবে না। লবন যুক্ত করার কারনে কোন চামড়া নষ্ট হবে না এবং সময় নিয়ে উপযুক্ত মূল্যে চামড়া বিক্রয় করা সম্ভব হবে।
মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ঢাকায় সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সভায় সভাপতিত্ব করে লবনযুক্ত চামড়ার ক্রয় মূল্য ঘোষণা করে এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলকে সচেতন হতে হবে এবং চামড়ায় লবনযুক্ত করা নিশ্চিত করতে হবে। দেশের মসজিদগুলোতে এ বিষয়ে কোরবাণীদাতাগণকে সচেতন করতে হবে। চামড়ার স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার দর, চাহিদা, সরবরাহ, রপ্তানির সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মতামত বিবেচনায় নিয়ে লবনযুক্ত প্রতি বর্গ ফুট গরুর চামড়া ঢাকায় ৪৭-৫২ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০-৪৪ টাকা, খাসীর চামড়া সর্বত্র ১৮-২০ টাকা এবং বকরির চামড়া সর্বত্র ১২-১৪ টাকা ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হলো। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের নির্ধারিত মূল্যে চামড়া ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, চামড়ার মূল্য গরীবের হক। এতিম খানা, মাদ্রাসা, আনজুমান মফিদুল ইসলামের মতো সংস্থাগুলোই বেশিরভাগ চামড়া সংগ্রহ করে থাকে। গরীবদের ন্যায্য পাওনা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। চামড়া ক্রয় নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যাংক প্রয়োজনীয় টাকা ঋণ মঞ্জুর করেছে। দেশে প্রয়োজনীয় লবন মজুত রয়েছে, লবনের সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রয়েছে। হাটে কোরবাণীর পশুর হাসিলার সময় পশু ক্রেতাদের প্রয়োজনীয় লবন ক্রয় নিশ্চিত করবে সিটি করপোরেশন। মাঠ পর্যায়ে সবধরনের সহযোগিতা প্রদানের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, এবার কোরবাণির চামড়া সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং নির্ধারিত মুল্যে ক্রয়-বিক্রয়ে কোন ধরনের সমস্যা হবে না এবং নষ্ট হবে না।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের চামড়া রপ্তানি বেড়েছে, আরও বাড়বে। সরকার দেশের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ওয়েট ব্লু চামড়া কেস টু কেস ভিত্তিতে রপ্তানির অনুমতি প্রদান করছে। এতোদিন কোরবাণীর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় লবনযুক্ত না করার কারনে অনেক সময় চামড়া নষ্ট হবার সম্ভাবনা থাকতো এবং বিক্রেতা কম দামে চামড়া বিক্রয় করতে বাধ্য হতেন। এবারে চামড়ায় নির্ধারিত সময়ে এবং প্রয়োজনীয় লবন যুক্ত করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এখন আর কোন চামড়া নষ্ট হবে না এবং বিক্রেতাগণ উপযুক্ত মূল্য পাবেন। চামড়ার গুণগত মান নিশ্চিত করতে যথাযথ ভাবে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে কোন চামড়া নষ্ট না হয়। সরকার এ বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার জন্য দেশের প্রচার মাধ্যমে টিভিসি প্রচার, লিফলেট বিতরনসহ পর্যাপ্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য, গতবছর লবনযুক্ত প্রতি বর্গ ফুট গরুর চামড়া ঢাকায় ৪০-৪৫ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৩-৩৭ টাকা, খাসীর চামড়া সর্বত্র ১৫-১৭ টাকা এবং ছাগল ভেড়া ও মহিষের চামড়া সর্বত্র ১২-১৪ টাকা ক্রয় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ সভায় বক্তব্য রাখেন। ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে সভায় বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আকতার হোসেন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েমনের সভাপতি শাহীন আহমেদ, বাংলাদেশ ফিনিশ লেদার এন্ড এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েমনের প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন, হাইড এন্ড স্কিন এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব খান। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্তকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এএ