তামাকে ক্ষতির শিকার সাড়ে ৭ কোটি মানুষ: আতিউর রহমান
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২২-০৭-২১ ১৯:২৯:১৭
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভাপতি ড. আতিউর রহমান বলেছেন, দেশে সাড়ে তিন কোটি মানুষ তামাক ব্যবহার করছে। আর ধূমপানের কারণে পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রায় চার কোটি মানুষ। সব মিলে সাড়ে সাত কোটি মানুষ তামাকের কারণে ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সেমিনারকক্ষে গবেষণা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমন্বয় আয়োজিত ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
আতিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে নির্দেশনা দিয়েছিলেন যে, তিনি ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান। তামাকের ব্যবহার কমাতে এর সহজলভ্যতা কমানো দরকার। তাছাড়া এর করাল গ্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করতে সবাইকে, বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলে, এরই মধ্যে আমরা তামাকের ভয়াবহতার বিষয়গুলো জনগণ ও নীতিনির্ধারকদের সামনে তুলে ধরতে কিছুটা হলেও সমর্থ হয়েছি। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে, বাজেট-পূর্ব আলোচনায় ও বাজেট চলাকালীন আলোচনায়ও আমরা তামাকের ক্ষতিকর বিষয়গুলোকে সবার সামনে আনার চেষ্টা করেছি। সব সরকারি-বেসরকারি অংশীজনের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি।
ড. আতিউর রহমান তামাকের ব্যবহার কমানোর জন্য ছয়টি প্রস্তাব তুল ধরেন। সেগুলো হলো- ধূমপানের জন্য এলাকা নির্ধারণ বাতিল করা, বিক্রয়স্থলে প্রদর্শনী বন্ধ করা, তামাক কোম্পানির সিএসআর বন্ধ করা, প্যাকেটে বা কৌটায় সচিত্র সতর্কবার্তার আকার আরও বৃদ্ধি করা, খুচরা শলাকা ও মোড়কবিহীন বিড়ি-সিগারেট বিক্রি নিষিদ্ধ ও ই-সিগারেট বা এইচটিপি নিষিদ্ধ করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এ গভর্নর বলেন, কৃষকদের সামনে যদি আমরা তামাক চাষ করলে জমির কী কী ক্ষতি হয়, স্বাস্থ্যের কী ক্ষতি হয় তা তুলে ধরতে পারি তাহলে সচেতনতা তৈরি হবে। তামাকবিরোধী আইনের রূপান্তরের পথে নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে প্রস্তাবিত খসড়াটিকে আইন হিসেবে সংসদে পাস করিয়ে আনতে হবে। তাহলে প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে দেশকে তামাকমুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছেন তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. শহীদুজ্জামান সরকার। আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাউবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. এসএম জুলফিকার আলী প্রমুখ।
এএ